নয়া দিল্লি : ফের খবরের শিরোনামে পেগাসাস। ভারতে শেষবার ২০১৯ সালে এর কথা শোনা গিয়েছিল। সেই সময় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী কয়েকজন সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাচ্ছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, পেগাসাস তাঁদের ফোনের অ্যাকসেস পেয়ে গেছে। কারও কারও মতে, পেগাসাস স্পাইওয়্যার কখনও খবরের বাইরে ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রায়ই এর ব্যবহার করে থাকে।
কী এই পেগাসাস ? কীভাবেই বা কাজ করে ?
ইজরায়েলি সংস্থা NSO গ্রুপ এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা এটাকে সাইবার অস্ত্র বলে থাকেন। ২০১৬ সালে এটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। একটি মেসেজ পাওয়ার পর সন্দিহান হয়ে ওঠেন আরবের এক সমাজকর্মী। তার পরই সামনে আসে পেগাসাসের কথা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, আইফোনকে টার্গেট করছে পেগাসাস। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার বেশ কিছুদিন পর অ্যাপেল iOS-এর আপডেট ভার্সন নিয়ে আসে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে ত্রুটি ছিল তা মেরামত করে ফেলে অ্যাপেল। এই ত্রুটির মাধ্যমে ফোন হ্যাক করতে ব্যবহার করা হচ্ছিল পেগাসাসকে।
এক বছর পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষকরা লক্ষ্য করেন, পেগাসাস একইভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনকেও হ্যাক করতে পারে। এর পর পেগাসাস তৈরি করার জন্য ২০১৯ সালে এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে ফেসবুক। এর পাশাপাশি ফেসবুকের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা পেগাসাসের গতিবিধির দিকে নজর রাখছিলেন। তাঁরা দেখেন, ভারতের বিভিন্ন সাংবাদিক ও সমাজকর্মীর ক্ষেত্রে এই সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে। এই সময়েই একটি মেসেজের মাধ্যমে 'আক্রান্ত' ব্যবহারকারীদের বিষয়টি নজরে আনে হোয়াটসঅ্যাপ।
কিন্তু এখনও কেন পেগাসাস নিয়ে কথা হচ্ছে ?
কারণ, সম্ভবত এই স্পাইওয়্যার এখনও পর্যন্ত সবথেকে আধুনিক ফোন হ্যাকিং টুল। এর পাশাপাশি এনএসও গ্রুপও পেগাসাসের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। যদিও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র সরকারকেই এই টুল বিক্রি করা হয়। এর অপব্যবহারের জন্য সংস্থা দায়ী নয়।
কীভাবে ফোন হ্যাক করে পেগাসাস ?
একবার কোনও একটা ফোনকে শনাক্ত করে নিলে হ্যাকার একটা ওয়েবসাইট লিঙ্ক পাঠায়। ব্যবহারকারী তাতে ক্লিক করলেই ফোনে পেগাসাস ইনস্টল হয়ে যায়। হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপে ভয়েস কলের সিকিউরিটি বাগের মাধ্যমেও এটা ইনস্টল হতে পারে। এতটাই গোপনে বিষয়টি হয় যে, ব্যবহারকারীকে একটি মিস কল দিয়েই পেগাসাস ইনস্টল করে ফেলা যায়। একবার ইনস্টল হওয়ার পর সব কললগ এন্ট্রি মুছে ফেলে এই সফ্টওয়্যার।