নয়াদিল্লি: ২০১৪ সালের আগে এবং পরে, দেশের আর্থিক অবস্থার তুলমূল্য বিচার করে লোকসভায় সরকারের তরফে প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রটি পেশ করা হতে পারে আজ। কিন্তু শ্বেতপত্র (White Paper On Economy) বিষয়টি ঠিক কী? শুধু লোকসভা নয়, নানা সময়ে নানা ইস্যুতে এই শ্বেতপত্রের প্রসঙ্গ শুনে থাকি আমরা। একবার দেখে নেওয়া যাক, কাকে বলে শ্বেতপত্র?


শ্বেতপত্র কী?
অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতায় শ্বেতপত্রের কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালে যখন প্রথম বার নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন ভারত 'সঙ্কট' পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। তবে সেই সঙ্কট কাটিয়ে দেশের অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদী বৃদ্ধির পথেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে, দাবি ছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। প্রাক ২০১৪ সময়ে কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের 'গাফিলতি'-কে এই জন্য দায়ী করে নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে লোকসভার টেবিলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। এখন প্রশ্ন হল, কাকে বলে শ্বেতপত্র?
সোজা কথায় 'শ্বেতপত্র' এক ধরনের তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট। এতে কোনও বিষয় নিয়ে সরকারি নীতি, সরকারের কৃতিত্ব এবং বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। স্ট্যানফোর্ড ল'স্কুল অনুযায়ী, সাধারণ মানুষ কোনও সরকারি নথি সম্পর্কে কতটা জানতে পারবেন, আদৌ পারবেন কিনা, এই মানদণ্ডের ভিত্তিতে নথিগুলিকে নানা রং দিয়ে 'কোডিং' করা হয়। এর মধ্যে সাদা রঙের অর্থ, সকলের কাছে এই নথির 'অ্যাকসেস' থাকবে। সরকারের তরফে কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করার অর্থ স্পষ্ট। কোনও বিষয় নিয়ে যখন সরকারের তরফে আলোচনা চাওয়া হয়, বা কোনও পদক্ষেপ করার কথা বলা হয় বা সিদ্ধান্তে উপনীত  হওয়ার ভাবনা থাকে, তখনই শ্বেতপত্র প্রকাশ করে তারা। 


কেন কেন্দ্র শ্বেতপত্র প্রকাশ করছে?
অর্থনীতির স্বাস্থ্য় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্বেতপত্র প্রকাশের মুখ্য উদ্দেশ্য় একটাই। কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার যে 'সঙ্কটে' দেশকে ফেলেছিল, সেখান থেকে নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বে কী ভাবে, ভারতের অর্থনীতির ছবিটা বদলে গিয়েছে, তা তুলে ধরা।  বিজেপি নেতা এবং অর্থনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জয়ন্ত সিনহা জানান, ২০১৩ সালে ভারত 'রুগ্ন ৫' অর্থনীতির একটি ছিল।  তাঁর কথায়, 'শ্বেতপত্রে আমরা দেখাব, অর্থনীতির হাল ঠিক কী ছিল আর কী ভাবে সেই পরিস্থিতি আমরা সামলেছি।' আর কয়েক মাস বাদেই লোকসভা ভোট। তার আগে, এই শ্বেতপত্র বিজেপির কাছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের আক্রমণের বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, এমনও মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


আরও পড়ুন:মার্কিন মুলুকে ছিনতাইয়ের কবলে ভারতীয় ছাত্র ! আহত অবস্থায় সাহায্যের আর্জি