নয়াদিল্লি: নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় গত মাসে কঙ্গনা রানাউতকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার হুমকি ফোন পাওয়ায় সাংসদ তথা অভিনেতা রবি কিষাণকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দিল যোগী সরকার।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে বলিউডের মাদক-যোগ। সংসদেও পড়েছে সেই আঁচ। বলিউডের মাদক যোগ নিয়ে অধিবেশন কক্ষে সরব হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর কেন্দ্রের সাংসদ রবি কিষাণ। এরপর থেকে তিনি হুমকি ফোন পেতে শুরু করেন বলে তাঁর অভিযোগ। এর জেরে উত্তরপ্রদেশ সরকার তাঁর নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। ওয়াই প্লাস নিরাপত্তার জন্য আদিত্যনাথকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। রবির ট্যুইট ’’আমি ঠিক সময়ে মুখ খুলব। যুবকদের এবং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়ে সরব হয়েছি। আমি নিজের কথা ভাবি না। দেশের ভবিষ্যতের জন্য ২-৫টি গুলি খেলেও কোনও ব্যাপার নয়।‘‘


বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, মাননীয় মহারাজ জি, আমার সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আপনি আমার জন্য ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিয়েছেন এর জন্য ধন্যবাদ। আমরা পরিবার ও সংসদীয় এলাকার মানুষেরও নিরাপত্তার দিকে আপনি খেয়াল রাখছেন। আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই। সংসদে আমার কন্ঠরোধ করা যাবে না। সম্প্রতি সংসদে বলিউডের মাদক যোগ নিয়ে কঙ্গনার সুরেই কথা বলেন তিনি। মাদককাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সরকারকে আবেদন করেন। এমনকি ভারতের যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিতে চিন এবং পাকিস্তান এই নেশা ছড়িয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই তীব্র প্রতিবাদ করেন সমাজবাদী পার্টি সাংসদ জয়া বচ্চন। বলেন, কয়েকজনের জন্য গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দুর্নাম করা হচ্ছে। প্রবাদের উল্লেখ করে জয়া আক্রমণ করেন রবিকে। জয়ার কটাক্ষ, যে হাত খাওয়াচ্ছে, তাঁকেই কামড়াচ্ছে! জয়াকে পাল্টা জবাব দেন রবিও। জানান, সামান্য পুরোহিতের ছেলে থেকে আজ তিনি ৬০০ ছবির অভিনেতা। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন দায়িত্ববান কর্মী হিসেবে মাদক যোগের বিষয়টি সংসদে তোলা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, জয়ারও বিষয়টি বোঝা উচিত।
তবে উত্তরপ্রদেশে যখন কখনও ১৯ বছরের তরুণী, কখনও ২২ বছরের মেয়েকেগণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠছে, নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে আদিত্যনাথ সরকার, তখনই রবির নিরাপত্তায় এই পদক্ষেপ। নারী সুরক্ষা যেখানে বিপন্ন, তখন দলীয় সাংসদকে ওয়াই প্লাস সুরক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের যত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের শাস্তি হয়েছিল। ২০১৫ সালে তা সামান্য বেড়ে হয় ২৯,৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে যখন যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় বসেন তখন ধর্ষণের মামলার মাত্র ৩২ শতাংশ ক্ষেত্রেই দোষ প্রমাণিত হয়েছে। ২০১৯ সালে যোগীর আলেই তা আরও কমে হয়েছে মাত্র ২৭.২ শতাংশ। অর্থাৎ‍ মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে! শাস্তি কমছে! এহেন উত্তরপ্রদেশেই আবার চাইতে না চাইতেই বিশাল নিরাপত্তা পেয়ে যাচ্ছেন বিজেপি সাংসদ!