নয়াদিল্লি: গাজায় বন্ধ হচ্ছে একের পর এক হাসপাতাল (Hospital)। বোমাবর্ষণের জেরে এবার পরিষেবা বন্ধ হওয়ার মুখে আরও হাসপাতালে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ২০টি হাসপাতালে বন্ধ হল পরিষেবা।
বৃহস্পতিবার গাজার অল শিফা হাসপাতালের কাছে হামলা চালায় ইজরায়েল (Israel Attacks Al Shifa Hospital)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জানিয়েছেন, আমরা জানতে পেরেছি বোমাবর্ষণের জেরে আল শিফা হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হচ্ছে। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে যে সংঘর্ষ চলছে তাতে এখনও পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি প্যালেস্তিনীয়র প্রাণ যায়। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা ৪ হাজার ৫০০-র বেশি।
গাজা এবং অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক মিলিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে যত প্যালেস্তিনীয় শিশু মারা গিয়েছে, তার চেয়ে গত এক মাসে ইজরায়েলি হামলায় অনেক বেশি শিশু মারা গিয়েছে। ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল প্যালেস্তাইনের তরফে এই পরিসংখ্যান সামনে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে তারা শুধুমাত্র ৪ হাজার ৩২৪ শিশু মারাই যায়নি, গত একমাসে ১ হাজার ৩৫০ প্যালেস্তিনীয় শিশুর কোনও হদিশ নেই বলেও জানিয়েছে তারা। ধ্বংসস্তূপের নীচে সকলে চাপা পড়েছে বলে অনুমান। নিখোঁজ শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে জানিয়েছে ওই সংগঠন (Israel Palestine Conflict)। গাজার স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও এই পরিসংখ্যানে সিলমোহর দিয়েছেন। তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সংস্থার মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেসের কথায়, "গাজার পরিস্থিতি দুঃস্বপ্নের চেয়েও ভয়াবহ। মানবিক সঙ্কট বললেও কম বলা হয়। গাজা শিশুদের সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা উচিত।"
ঘটনা হল, ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত আক্রমণে প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল ইজরায়েলকে। ১ হাজার ৪০০ জন মারা যান ওই হামলায়, ২৪০ জনকে পণবন্দি করেছিল হামাস। প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটে ইজরায়েল। তার পর থেকে টানা হামলার জেরে বিধ্বস্ত গাজা। সঙ্গে রয়েছে ইজরায়েলের অবরোধ। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির চাপে গাজায় ত্রাণের প্রবেশে মৌখিক ভাবে রাজি হলেও তা যে প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য, সে কথা বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই সতর্কবার্তায় কান দেয়নি ইজরায়েল। কেউ খালি পায়ে, কারও হাতে সামান্য জামাকাপড়, কারও আবার সেটুকু নেই। সংবাদমাধ্যম সূত্রে গাজা স্ট্রিপের বড় অংশে জলের অভাব। কিন্তু সাধারণ অবস্থাতেই যেখানে গাজার বাসিন্দাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় জল থাকে না, সেখানে ভিটেহারা হওয়ার পর, এই যুদ্ধের আবহে দিন গুজরানের ন্যূনতম জিনিসপত্র তাঁরা কোথায় পাবেন? প্রতিবেশি দেশগুলির আশঙ্কা, ভয়ঙ্কর ভাবে শরণার্থী সমস্যা বাড়বে তাদের উপর।
আরও পড়ুন: Puri Temple: মঙ্গলারতির সময় হঠাৎই বিপত্তি, পুরী মন্দিরে অসুস্থ পুণ্যার্থীরা