কলকাতা: সুজাপুরের বিস্ফোরণস্থলে তাদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূল আমলেই কেন পরপর বিস্ফোরণ হচ্ছে বলে প্রশ্ন তুললেন দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। দুর্ঘটনাকে নিয়ে হইচই করা হচ্ছে বলে পাল্টা তোপ মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর।
বৃহস্পতিবার সকালে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় মালদার সুজাপুরের এই প্লাস্টিক কারখানা। প্রাণ হারান ৬জন। আর এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। বৃহস্পতিবারই বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে কারখানা চত্বর ঘিরে দেয় পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে সেই ব্যারিকেড টপকে বিস্ফোরণস্থলে ঢুকতে যায় বিজেপির প্রতিনিধি দল। তাতে বাধা দেয় পুলিশ। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। রাজ্য বিজেপির কিষাণ মোর্চার সভানেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর দাবি, পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাজ্য ঘটনাস্থলে যেতে দিচ্ছে না। মালদা-মুর্শিদাবাদ থেকে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বেশ কিছু লোককে গ্রেফতার করেছে। এই এলাকা সন্ত্রাসের আখড়া। তাই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এনআইএ তদন্তের দাবি করেন তিনি। পাল্টা মালদার তৃণমূল মুখপাত্র শুভময় বসুর কটাক্ষ, শ্রীরূপা নাটক করতে গিয়েছেন। তাই পুলিশ আটকেছে। পুলিশের যা কাজ তাই করছে। তদন্ত হচ্ছে। সত্যি বেরবে। আর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, ভোটের আগে ভয়ের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা তৃণমূলের। কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে তদন্ত দরকার। তবে এই দাবি উড়িয়ে পাল্টা রাজ্যের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, কিছু হলেই জঙ্গি যোগের কথা উঠছে। এটা খেলো রাজনীতি!
বিজেপির সুরেই বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ট্যুইট করেন, সুজাপুরে বিস্ফোরণে এতজনের মৃত্যুর ঘটনায় আমি বিস্মিত। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ অবৈধভাবে বোমা তৈরি বন্ধ এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।
তবে বিজেপি ও রাজ্যপালের এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে, রাজ্য পুলিশেই আস্থা দেখিয়েছে কংগ্রেস। শুক্রবার সকালে বিস্ফোরণস্থলে যায় কংগ্রেসের ৬ বিধায়কের প্রতিনিধি দল। নিহতদের বাড়িতেও যান তাঁরা। মানিকচকের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাকিন আলম বলেন, ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয়। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাব আরও দিক। রাজ্য পুলিশে ভরসা আছে। ঠান্ডা ঘরে বসে বিজেপি ও রাজ্যপাল এ নিয়ে রাজনীতি করছে।

বিস্ফোরণের তত্ত্ব উড়িয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে বৃহস্পতিবার ট্যুইট করে দাবি করা হয়, সুজাপুরে প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণের নেপথ্যে উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় জড়িত। কোনওভাবেই সেখানে বোমা তৈরি হত না। কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে সেটাই অনেকে দাবি করছেন। যদিও বিজেপি এনআইএ তদন্তের দাবিতে এখনও অনড়।