ওয়াশিংটন ডিসি: কোনও হলিউডি সায়েন্স ফিকশন নয়,বাস্তবেই ঠকঠক করে কাঁপছে আমেরিকা (US)! ভয়ঙ্কর শৈত্যঝড়ে (blizzard) মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (US) ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্রিসমাসের মরসুমে সব অর্থেই মৃত্যুশীতল বরফ বিছিয়ে দিয়েছে এই ঝড় (winter storm)। আতঙ্কে দিন কাটছে দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্ত লাগোয়া রিও গ্রান্ড নদী থেকে বিস্তীর্ণ এলাকায়।
দিকে দিকে বিপদ...
ঝড় সম্পর্কিত কারণে কলোরাডো, ইলিনয়, কানসাস, কেন্টাকি, মিশিগান, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, নিউ ইয়র্ক, ওহায়ো, ওকলাহোমা, টেনেসি এবং উইসকনসিন মিলিয়ে আরও ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এক নিউ ইয়র্কের এরি কাউন্টিতেই ক্রিসমাসের আগে ও পরে যে তুষারঝড় এসেছিল তাতে ২৭ জনের প্রাণ গিয়েছে। সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে এরি কাউন্টির এগজিকিউটিভ মার্ক পোলোনকার্জ বলেন, 'ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে। সাতাত্তর সালের তুষারঝড়ের থেকেও মারাত্মক অবস্থা এবং এখন মনে হচ্ছে, গ্রামের দিকে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।'মার্কিন ইতিহাসে ১৯৭৭ সালের তুষারঝড় "Blizzard That Buried Buffalo" নামে পরিচিত। সে বারের বিপর্যয়ে ২৯ জনের মৃত্যু হয়। বেশিরভাগই নিজের গাড়িতে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন বলে জানায় আমেরিকার উত্তরপূর্ব আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর। তবে এখন যা পরিস্থিতি তা আগের সেই ভয়াবহতাকে কয়েক গুণে হার মানিয়েছে, দাবি প্রশাসনের।
কী অবস্থা?
মার্কিন প্রশাসনের মতে, বর্তমানে যে শৈত্যঝড়ে দাপট চলছে তা সম্ভবত একটা গোটা প্রজন্মের কাছেই অভূতপূর্ব। সোমবার সকালে কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি বরফপাত হয়েছে। ফল? বিস্তীর্ণ এলাকায় জমা বরফের উচ্চতা এখন ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি। নিউ ইয়র্কের গভর্নর ট্য়ুইট করেন, 'ঝড়ের তীব্রতা কমছে। কিন্তু এখনও বিপদ কাটেনি।' মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা মোটেও কাটেনি। প্রাদেশিক এবং স্থানীয় প্রশাসনকে ত্রাণ ও উদ্ধার জারি রাখতে তাই নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে আমজনতার জন্য এখনও সাবধানবাণী বহাল, 'কোনও ঝুঁকি নেবেন না। বাড়ি থেকে বেরোবেন না, রাস্তায় নামবেন না। নিরাপদে থাকুন।'এই মুহূর্তে দেশের বিস্তীর্ণ অংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। জায়গায় জায়গায় প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া রয়েছে। গত দুদশকের মধ্যে সবথেকে শীতল ক্রিসমাস দেখেছে খোদ ওয়াশিংটন ডিসি। আপাতত যা পূর্বাভাস তাতে মার্কিন মুলুকের পূর্ব অংশে সোমবার পর্যন্ত হাড় জমে যাওয়া ঠান্ডার দাপট থাকবে। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। কিন্তু এই বিপর্যয়ের সার্বিক ধাক্কা পড়েছে উড়ান পরিষেবায়। মার্কিন সময় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক বিমান মিলিয়ে ৩২০০টি উড়ান বাতিল হয়েছে। দেরিতে চলেছে ৮ হাজার ২০০টি বিমান। স্থানীয় পরিবহণেও বিস্তর অসুবিধার মুখোমুখি সাধারণ মানুষ। সব মিলিয়ে অনেকটা যেন The Day After Tomorrow ছবির সেই দৃশ্য। ছবিতে অবশ্য বরফের চাদর সরে সূর্যের আলোর মুখ দেখেছিল আমেরিকা। বাস্তবে কবে হবে তা?বছরশেষে অপেক্ষায় মার্কিন মুলুক।
আরও পড়ুন:ভোটের আগে অনুব্রত-গড়ে ফাটল? সকালে দল ছেড়ে বিকেলেই বিজেপিতে যোগ কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ বিপ্লবের