কলকাতা: এই মুহূর্তে পাকিস্তানের ৪০ শতাংশ বাসিন্দা দারিদ্র্যসীমার (poor) নিচে বসবাস করছেন, নয়া রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর দাবি ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের। তাদের বক্তব্য, সীমাহীন দারিদ্র্যের এই ছবি বদলাতে হলে দ্রুত, কড়া নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে পাকিস্তানের প্রশাসনকে। নির্বাচন আসন্ন। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের স্পষ্ট বার্তা, তার আগেই এই ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্য়ন্ত জরুরি। (Pakistan Poverty)
কী বলছে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক?
কৃষি এবং রিয়েল এস্টেট--এই দুটি ক্ষেত্রে কর বাড়িয়ে পাকিস্তানের টালমাটাল অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। সে সঙ্গেই গত শুক্রবার পেশ করা রিপোর্টে, তাদের বক্তব্য গত অর্থবর্ষে সে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী বাসিন্দার হার ৩৯.৪ শতাংশে পৌঁছে যায়। সংখ্যার নিরিখে বলতে হলে, শেষ অর্থবর্ষে আরও ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি পাক নাগরিক দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গিয়েছেন। এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী পাকিস্তানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী নাগরিকের সাড়ে ৯ কোটি। সহজ কথায় দেশের পরতে পরতে সীমাহীন দারিদ্র্যের ছবি। (world Bank)
পরামর্শে যা বলা হল...
ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের দাবি, পাকিস্তানের এই ভয়ঙ্কর আর্থিক অবস্থায় বদল ঘটাতে সংশ্লিষ্ট সব তরফের সঙ্গে কথা বলেই নতুন সরকারের জন্য একটি খসড়া নীতি তৈরি করা হয়েছে। তাতে কী বলা হচ্ছে? ওয়াশিংটন-বেসড ওই ব্যাঙ্কের পরামর্শ, নতুন সরকারকে নিম্নমুখী মানবসম্পদ উন্নয়ন, টলোমলো আর্থিক পরিস্থিতি, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রিত বেসরকারি ক্ষেত্র, কৃষি এবং শক্তি ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও তাদের বক্তব্য, অবিলম্বে ট্যাক্স-টু-জিডিপি অনুপাত ৫ শতাংশ বাড়ানো প্রয়োজন পাকিস্তানে। পাশাপাশি জিডিপি-র ২.৭ শতাংশ খরচ কমাতেও বলেছেন তাঁরা। পাকিস্তানে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবদ তোবিয়াস হকও জানান, বর্তমানে সে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত আধিকারিকরা। অর্থনৈতিক এবং মানবাধিকার সঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তান বেশ কয়েক বছর ধরেই ধুঁকছে। তার উপর পাক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সেই অবস্থা আরও ঘোরাল করে তুলেছে। গত জুলাই মাসে তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। দীর্ঘদিন ধরে দরাদরির পর অবশেষে সাময়িক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ইসলামাবাদ। অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে, স্বল্পমেয়াদে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ মঞ্জুর করে তারা। দফায় দফায় এই ঋণের টাকা পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হবে, বলা হয়েছিল জুলাইয়ে। কিন্তু শুধু ঋণ দিয়ে কি পরিস্থিতি শোধরানো যাবে? বিশ্বব্যাঙ্কের হালের রিপোর্ট অন্য কথা বলছে। তাদের বক্তব্য একটাই। আর্থিক হাল ফেরাতে হলে অবিলম্বে বলিষ্ঠ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কিন্তু ইসলামাবাদে ক্ষমতার কোনও একক কেন্দ্র যে নেই, সেটা বহু বছর আগেই স্পষ্ট। সেই বাধা পেরিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া কি সম্ভব?
আরও পড়ুন:চাঁদের বুকে এখনও 'ঘুমিয়ে' বিক্রম, প্রজ্ঞান? ইসরোর ডাকে দিল কি সাড়া?