নয়া দিল্লি: সম্প্রতি বিশ্ব বৈষম্য রিপোর্টে (World Inequality Report) দেখা গেল বিশ্বের অন্যতম গরীব দেশের মধ্যে রয়েছে ভারতের নাম। শুধু তাই নয় ‘চরম অসাম্যের দেশ’হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের নাম। অর্থাৎ ভারতের এক শ্রেণির মানুষের হাতে সম্পদ প্রায় নেই বললেই চলে, আবার যাঁদের প্রাচুর্য্য বেশি তাঁদের সম্পদের পরিমাণ বাড়ছে ক্রমাগত। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই ট্রেন্ড দেশের আগামী দিনের জন্য চিন্তার। 


রিপোর্ট এ বলা হয়েছে, এই বছর, দেশের মোট জাতীয় আয়ের এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি (২১.৭%) উপার্জন করেছে অর্থনৈতিক দিক থেকে জনসংখ্যার শীর্ষ থাকা ১ শতাংশ মানুষ। পরিসংখ্যান অনুসারে জাতীয় আয়ের ৫৭ শতাংশের মালিক ছিল জনসংখ্যার উপরের দিকের ১০ শতাংশে। আর সেখানে নীচের ৫০ শতাংশের উপার্জন, জাতীয় আয়ের মাত্র ১৩.১ শতাংশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর জানায়, এই রিপোর্টটি World Inequality Lab-এর কো-ডিরেক্টর লুকাস চ্যান্সেল এবং ফরাসি অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি সহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ লিখেছেন। 


এই রিপোর্টের মুখবন্ধ লিখেছেন নোবেলজয়ী দুই অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার ডুফলো। সেখানেই দুই অর্থনীতিবিদ লিখেছেন, বিশ্বের যে সব দেশে অসাম্য চরমে, ভারত এখন তার মধ্যে পড়ছে। ২০২১ সালে ক্রয় ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে, ভারতীয় প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার জাতীয় গড় আয় ছিল বছরে ২,০৪,২০০ টাকা। তবে, জনসংখ্যার নীচের ৫০ শতাংশ মানুষের বার্ষিক আয় ছিল গড়ে ৫৩,৬১০ টাকা। অর্থাৎ জাতীয় গড় আয়ের থেকে নিচের ৫০ শতাংশ মানুষের আয় ছিল প্রায় দেড় লক্ষ টাকা কম।  


দেশের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, একটি ভারতীয় পরিবারের গড় সম্পদের মূল্য ৯,৮৩,০১০ টাকা। সম্পদের ক্ষেত্রে অসাম্যের মাত্রা আরও বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যার নীচের ৫০ শতাংশ মানুষের 'প্রায় কিছুই' নেই, গড় সম্পদ মাত্র ৬৬,২৮০ টাকা। মধ্যবিত্তরাও তুলনামূলকভাবে অনেক গরীব। দেশের মোট সম্পদের ২৯.৫ শতাংশের মালিকানা আছে মধ্যবিত্তদের হাতে। অর্থনীতিবিদদের কথায়, কোটিপতিদের সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। নীচের সারির অর্ধেক মানুষের কাছে এই ধনীদের তুলনায় মাত্র ২ শতাংশ সম্পদ রয়েছে।