হায়দরাবাদ : করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষকে অনেক বিষয়ে সতর্ক করে চলেছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। কীভাবে থাকতে হবে, কী এড়িয়ে গেলে শরীরের পক্ষে ভাল-এরকমই একাধিক বিষয়। সেই তালিকাতেই রয়েছে- ধূমপানের বিষয়টি। এমন একাধিক উদাহরণ রয়েছে যেখানে দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত সিগারেট খান, তাঁদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ বেশি ক্ষতি করেছে।
প্রতি বছর ৩১ মে দিনটি ওয়ার্ল্ড নো টোবাকো ডে হিসাবে উদযাপিত হয়। তাই সেই দিনের প্রাক্কালে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আরও একবার এনিয়ে সতর্ক করে দিলেন। তাঁদের মতে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই জরুরি পরিস্থিতিটা যদি ধূমপান ছাড়ার পক্ষে যথেষ্ট কারণ না হয়, তাহলে আর কিছুই হবে না।
এই অতিমারিতে ধূমপানের অভ্যাস কতটা ক্ষতি করতে পারে ? এপ্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে SLG হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মেডিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট সুরেন্দ্র বাথুলা সংবাদ সংস্থা IANS-কে বলেন, তামাকজাত দ্রব্যে প্রতিবছর ৮০ লক্ষর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যে কোনও ক্যানসারে মৃত্যুর পিছনে ২৫ শতাংশের ক্ষেত্রে প্রাথমিক কারণ, তামাকের ব্যবহার। ধূমপান ফুসফুসে ACE-2 রিসেপ্টরের প্রকাশ ঘটায়। ফলে, করোনা ভাইরাসের মানব শরীরে আক্রমণ করার প্রচুর জায়গা তৈরি হয়। এবং এর জেরে মারাত্মক ক্ষতি হয়।
Gleneagles Global Hospitals-এর Cluster COO মার্ভিন লিও বলেন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়াটাই সবথেকে ভাল পথ। কিন্তু, আপনি যদি এখনই তা না করতে পারেন, তাহলে ই-সিগারেট বা স্মোকলেস টোবাকোতে শিফট করে যান। তবে, ওয়াটারপাইপ বা ই-সিগারেট অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন না। সেকেন্ড হ্যান্ড/প্যাসিভ স্মোকিং থেকে অন্যকে রক্ষা করুন। ধূমপান করার সময় অন্যের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। পাবলিক স্পেসে থুতু ফেলবেন না। কারণ, তাতে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
আমেরিকার ডজ সিটির ওয়েস্টার্ন প্লেনস হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক অনুষা রেড্ডি বলেন, ধূমপানের কারণে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রম দেখা দেয়। যে জটিলতা করোনা সংক্রমণ গুরুতর হলেও দেখা দিতে পারে, যাঁদের সিভিয়র রেসপিরেটরি ইনফেকশনের সমস্যা আছে তাঁদের মধ্যে। আমেরিকায় কাজ করার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যাঁরা ধূমপান করেন বা ড্রাগ নেন, তাঁরা এই করোনা সংক্রমণ পর্বে ভুগেছেন। এইসব রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়া প্রমাণ করে, ধূমপানের জেরে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। এইসব মানুষ যখন করোনায় আক্রান্ত হন, তাঁরা খুবই দুর্বল হয়ে পড়েন।