কাবুল: আফগানিস্তানের পুরোপুরি দখল করতে তালিবানের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্জশির। হিন্দুকুশের কোলে এই উপত্যকা এবার তাদের দখলে এসেছে বলে দাবি করল তালিবান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তালিবান সূত্র উদ্ধৃত করে এ কথা জানিয়েছে। আফগানিস্তান দখলে এলেও পঞ্জশিরে তালিবান-বিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তোলে আহমেদ মাসুদ ও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ্-র বাহিনী। যুদ্ধ শুরু হয় দু’ পক্ষের। যুদ্ধে শেষপর্যন্ত তাদেরই জয় হয়েছে বলে দাবি করেছে তালিবান। আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ্ ট্যুইট করে পাল্টা দাবি করেছেন, দেশ ছেড়ে কোথাও যাইনি। দেশের মর্যাদা রক্ষায় লড়াই চালাচ্ছি। 


সালেহ ট্যুইটে লিখেছেন, প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে এবং অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেছেন, নিজেদের  মাটির সঙ্গে,নিজেদের মাটির জন্য এবং তার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে তাঁরা রয়েছেন। 


এদিকে, আফগানিস্তানে আজই নতুন সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করতে পারে তালিবান। নতুন সরকারের প্রধান হতে পারে তালিবানের রাজনৈতিক প্রধান আবদুল গনি বরাদর। সুপ্রিম লিডার হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। 


জানা গেছে, কাবুলে জোর কদমে চলছে তালিবানের নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি। তাদের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবি, শনিবারই নতুন সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করা হতে পারে।


তালিবান সূত্রে জানা গেছে,নতুন সরকারের প্রধান হতে পারেন মোল্লা আবদুল গনি বরাদর।তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুব এবং দোহায় তালিবানের দফতরের রাজনৈতিক প্রধান শের মহম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজাইকে দেখা যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ পদে।


তালিবানের তথ্য ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত কমিশনের আধিকারিক মুফতি ইনামুল্লাহ্ সামাঙ্গানির দাবি,ইরানের আয়াতুল্লা খামেইনির মতো তালিবানের সুপ্রিম লিডার হবে সংগঠনের প্রধান মোল্লা হেবাতুল্লাহ্ আখুন্দজাদা। তার হাতেই থাকবে দেশের রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামরিক বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ।


নতুন তালিবান সরকারের মডেল অনুযায়ী,  প্রদেশগুলির পরিচালনার ভার থাকবে গভর্নরদের ওপর।জেলা সামলানোর দায়িত্ব ডিস্ট্রিক্ট গভর্নরদের।


সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের সব প্রদেশ ও জেলার গভর্নর, পুলিশের প্রধান এবং পুলিশ কম্যান্ডারদের নিয়োগ করেছে তালিবান নেতৃত্ব। তবে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত কিংবা জাতীয় পতাকা কেমন হবে, তা এখনও নির্ধারিত নয়।


তবে এখনও অবধি তালিবানের সামনে দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো দাঁড়িয়ে আছে পঞ্জশির। সেই দুর্গই তাদের দখলে এসেছে বলে দাবি তালিবানের। 


আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই তালিবান এবং নর্দান অ্যালায়েন্স, দু’পক্ষকেই লড়াইয়ের পথ ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছিলেন।