প্রাণে বাঁচতে চাইলে ফুটবল কিট পুড়িয়ে দাও। পরিচয় গোপন রাখার চেষ্টা করো। বন্ধ করে দাও সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। তালিবান-আতঙ্কে কাঁপছে আফগানিস্তান। প্রাণ বাঁচাতে মহিলা ফুটবলারদের এমনই পরামর্শ দিলেন আফগান মহিলা ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক খালিদা পোপল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে খালিদার কথায় ধরা পড়েছে উদ্বেগ। 


আফগানিস্তানের মহিলা ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক খালিদা পোপাল বুধবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে, আফগানিস্তানে মহিলা ফুটবল খেলোয়াড়দের সতর্ক করেন। অতীতের অক্ষিজ্ঞতায় আতঙ্কে তিনি। বর্তমানে তালিবান শাসনে মহিলা ফুটবলাররা যে কোনও মুহূর্তে বিপদে  পড়তে পারেন । কোপেনহেগেনে বসবাসকারী প্রাক্তন আফগান মহিলা ফুটবলার দেশে মেয়েদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আতঙ্কিত। তাঁর অনুরোধ, দেশের মহিলা ফুটবলাররা যেন তাঁদের পরিচয় গোপন রাখেন। প্রয়োজনে তাঁদের ফুটবল কিট পুড়িয়ে দেন। পোপলের পরামর্শ, প্রাণে বাঁচতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছবি মুছে ফেলুন।   


রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে আফগান মহিলা ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক খালিদা পোপল জানান,  অতীতে জঙ্গিরা মহিলাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ করেছে। পাথর ছুড়ে মেরেছে। তাই সেদেশের মহিলা ফুটবলারদের সঙ্গে কী ঘটতে পারে, তা ভেবে শঙ্কিত তিনি। আফগান মহিলা ফুটবল লিগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। পোপল বরাবরই নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন । এর আগে, তিনি আফগান মহিলাদের  সাহস সঞ্চয় করে এগিয়ে আসতে বলেন। আবডাল ছেড়ে ময়দানে নামতে অনুপ্রেরণা জোগান। এবার তাঁর গলাতেই উত্কণ্ঠার সুর।   "আজ আমি তাঁদের বলছি,  পরিচয় দেবেন না, মুছে ফেলুন,  ছবি সরিয়ে ফেলুন।  এমনকী তাদের জাতীয় দলের ইউনিফর্মও পুড়িয়ে ফেলতে বলছি। তবেই হয়ত তারা তালিবানের হাত থেকে পরিত্রাণ পাবে" 

পোপল আরও বলেন, তিনি বহুদিন ধরে নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু তালিবানের এই দৌরাত্ম্য তাঁদের সব চেষ্টায় জল ঢেলে দিল। 

ক্ষমতা দখলের পরেই আফগানিস্তানে সরকারি টেলিভিশনে মহিলা অ্যাঙ্কর ছাঁটাই করে আফগানরা। তাঁর জায়গায় নিয়োগ করা হয় পুরুষ সঞ্চালককে। তালিবান-শাসনে মহিলারা কাজ করতে পারবেন, আফগানিস্তান দখলের পর আশ্বাস দিয়েছিলেন তালিবান মুখপাত্র জয়বুল্লা মুজাহিদ। বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ছবি। সরকারি চ্যানেলে কাজ হারালেন মহিলা অ্যাঙ্কর। গত সপ্তাহেই কাজে যোগ দেন আফগানিস্তানের সরকারি চ্যানেলের মহিলা সঞ্চালক খাদিজা আমিন। তাঁর দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, তালিবানের নির্দেশে মহিলারা চ্যানেলে কাজ করতে পারবেন না।