নয়া দিল্লি: তালিবানরা কাবুল দখলের পর প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ৪৫ মিনিট বৈঠক শেষে দেশ ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এরপরই গোটা দেশের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। স্বয়ং প্রেসিডেন্টের এমন দেশ ছেড়ে পালানোর ঘটনায় বিতর্কের ঝড়ও ওঠে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনেই সুর চড়িয়েছেন গনি। 


ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, দেশে থাকলে হয় তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলতো তালিবান। অন্যথায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নজিবুল্লাহর মতো পরিণতি হতো তাঁর। অর্থাৎ ল্যাম্পপোস্টে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলাত তালিবানরা। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ওখানে থাকলে রক্তপাত ঘটতই। হয় আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতো তালিবান। নয়ত আরেক প্রেসিডেন্টকে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলতে দেখত আফগানবাসী।’ 


প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের আর এক প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লাকে তিন দশক আগে কাবুলে ঘিরে ধরেছিল মুজাহিদিন, সেই সময় প্রাণ বাঁচাতে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করেছিলেন নাজিবুল্লাও। কিন্তু যাঁদের উপর বিশ্বাস করে জীবন বাজি রেখেছিলেন, তারাই বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁর সঙ্গে। শেষে সুসজ্জিত প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ।


পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তিনি চপারে করে টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছেন। সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গনি। তার দাবি, বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের কঠোর নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে তিনি আরব আমিরশাহীতে প্রবেশ করেছেন। ফলে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ টাকা থাকলে তখন তা ধরা পড়ে যেতো। তাঁর কথায়, ‘আমি শুধু পরনের কয়েকটা জামাকাপড় নিয়ে এসেছি।"  অন্যদিকে,প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যস্থতায় সরকার গঠনের যে চেষ্টা চলছে, সেই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। যদিও উভয়ের সঙ্গেই তিক্ত সম্পর্ক ছিল গনির। 


আশরাফ গনির অনুপস্থিতিতে তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ নিজেকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। এখনও আফগানিস্তানে ফেরার কোনও ইঙ্গিত দেননি আশরাফ গনি।