ঢাকা: নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের মোবাইল ফোন কানেকশন দিতে দেশের ৪টি মোবাইল ফোন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে বারণ করে দিল বাংলাদেশ সরকার। ৪ লক্ষের বেশি নতুন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে তারা মোবাইল ফোনের সংযোগ দিতে পারবে না, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার মধ্যে একজন রোহিঙ্গাকেও সংযোগ বিক্রি করলে সেই কোম্পানিকে জরিমানা দিতে হবে বলে সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকম মন্ত্রকের জনৈক শীর্ষকর্তা বলেছেন, আপাতত রোহিঙ্গারা কোনও সিম কার্ড কিনতে পারবে না।

বাংলাদেশের জুনিয়র টেলিকম মন্ত্রী তারানা হালিম রাষ্ট্রের নাগরিকত্বহীন রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে মোবাইল সংযোগে নিষেধাজ্ঞা জারির গতকালের সিদ্ধান্তের পিছনে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়েছেন।

দেশের মাটিতে সক্রিয় জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ এমনিতেই নিয়ম করেছে যে, সরকারি পরিচয়পত্র দেখাতে না পারলে দেশের নাগরিকদের সিম কার্ড বিক্রি করা যাবে না।

হালিম বলেন, মানবিকতার স্বার্থে আমরা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়েছি বটে, কিন্তু আমাদের নিজেদের নিরাপত্তাকেও উপেক্ষা করা যায় না। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঠিক কী ধরনের বিপদ, তা অবশ্য জানাননি তিনি।

তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র দেওয়া হয়ে গেলে তাদের মোবাইল সংযোগ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের টেলিকম কর্তৃপক্ষ। বায়োমেট্রিক পরিচিতি দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে ৬ মাস লেগে যেতে পারে বলে মত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর।

ইতিমধ্যেই গত ৪ সপ্তাহ ধরে দলে দলে আসা রোহিঙ্গাদের ঢল সামলাতে বাংলাদেশ বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যেমন, তাদের সীমান্ত এলাকার আশপাশেই আটকে রাখতে বলা হয়েছে সেনা, পুলিশকে, যাতে তারা কোনওভাবেই অন্যত্র বা শহরে ঢুকে পড়তে না পারে। বনজঙ্গল বা চাষের জমিতে বসে পড়া রোহিঙ্গাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জলের অভাব থাকায় অনেক উদ্বাস্তু অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের ঠেকাতে অস্থায়ী শিবিরের কাছে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ প্রধান ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, কক্সবাজার হাইওয়েতে ১১টি চেকপোস্ট বসিয়েছেন তাঁরা, যাতে রোহিঙ্গারা দেশের আরও ভিতরে ঢুকতে না পারে।