বেজিং: ব্রিকস সম্মেলনে গৃহীত ঘোষণাপত্রে ভারতের উদ্বেগে সহমত জানিয়ে বাকিদের সঙ্গে পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা লস্কর-ই-তৈবা ও জয়েশ-ই-মহম্মদ, হক্কানি সহ নানা জঙ্গি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসে উদ্বেগ প্রকাশের তিনদিনের মধ্যেই সুর বদলে ইসলামাবাদের পাশে বেজিং!

জিয়ামেন সামিটের ঘোষণায় এই প্রথম জয়েশ, লস্করের নাম থাকা কূটনৈতিক স্তরে ভারতের বড় সাফল্য বলে দেখা হচ্ছে। এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জে জয়েশ প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণায় ভারতের প্রয়াসে বাধা দেওয়া থেকে চিন এবার বিরত থাকবে কিনা, সেই জল্পনাও শুরু হয়।

কিন্তু পাকিস্তানের প্রতি মনোভাব যে বদলায়নি, সেই ইঙ্গিত দিয়ে 'সর্বসময়ের মিত্রের' সমর্থনে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই শুক্রবার বেজিং সফররত পাক বিদেশমন্ত্রী খোয়াজা মহম্মদ আসিফকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্ব লোহার মতো কঠিন। চিনের ভাল ভাই পাকিস্তান। পাকিস্তানকে চিনের মতো ভাল চেনে না, বোঝে না কেউ।

সরাসরি ব্রিকস সম্মেলনের উল্লেখ না করে সন্ত্রাসবাদ গোটা দুনিয়ার সমস্যা, এর মোকাবিলায় সব দেশের সঙ্ঘবদ্ধ প্রয়াস চাই বলে অভিমত জানান তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, পরস্পরকে দোষারোপ না করে সব দেশের মিলেমিশে কাজ করা দরকার। বছরের পর বছর পাকিস্তান সন্ত্রাসের শিকার। আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটের এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক। পাকিস্তানের সরকার ও জনগণ সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইয়ে বিরাট চেষ্টা করেছে, বলিদান দিয়েছে। সবার চোখের সামনেই সেই অবদান রয়েছে। তাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত আন্তর্জাতিক মহলের। সন্ত্রাসবাদ দমনের ব্যাপারে পাকিস্তান শুদ্ধ বিবেক নিয়ে তার যথাসাধ্য ভূমিকা পালন করেছে।

ভারত, আমেরিকার প্রতি ইঙ্গিত করে চিনা মন্ত্রী বলেন, কিছু দেশের বরং উচিত পাকিস্তানকে প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু দেওয়া।

ব্রিকস সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রস্তাবে চিনের সমর্থনের প্রেক্ষাপটেই পাক বিদেশমন্ত্রীর এবারের বেজিং যাত্রা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক দক্ষিণ এশিয়া ও আফগানিস্তান নীতি ঘোষণার সময় পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনার পরপরই ব্রিকসে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে তাদের।

এমনকী বেজিং রওনার প্রাক্কালে পাক বিদেশমন্ত্রীই এই প্রথম মেনে নেন, বিশ্বমঞ্চে বিড়ম্বনা এড়াতে হলে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির রাশ টেনে ধরতেই হবে।