বেজিং: আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। চিন জানিয়ে দিল, চলতি পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ গোষ্ঠীর বৈঠকে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করবে তারা।


এদিন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শ্যুয়াং বলেন, যতদূর নন-এনপিটি (পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তি স্বাক্ষর না করা) দেশগুলির এনএসজি-তে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তাদের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন হয়নি।


সুইৎজারল্যান্ডের রাজধানী বার্ন শহরে চলছে এসএসজি গোষ্ঠীর প্লেনারি সম্মেলন। শ্যুয়াং বলেন, নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে এনএসজি-র নির্দিষ্ট নীতি রয়েছে। সোল প্লেনারিতে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। তাঁর আশা, বার্নেও সেই নীতি অবলম্বন করা হবে।


গত বছর সোলের প্লেনারিতেও ভারতের আবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। ভারতের আবেদনকে সমর্থন জানায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন পশ্চিমী দেশ। কিন্তু, চিন জানিয়ে দেয়, যদি নতুন কোনও রাষ্ট্রকে এনএসজি-র সদস্য হতে ইচ্ছুক রাষ্ট্রগুলিকে এনপিটি স্বাক্ষর করতে হবে। পাল্টা ভারতের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা এনপিটি স্বাক্ষর করবে না।


এই প্রথম নয়। এর আগেও বেজিং বহুবার স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ গোষ্ঠীতে ভারতের যুক্ত করার প্রশ্নে তাদের অবস্থানের কোনও বদল হয়নি। তাদের দাবি, এনএসজিতে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সকল নন-এনপিটি (পরমাণু অস্ত্রপ্রসাররোধ চুক্তি স্বাক্ষর না করা) রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে এক ও অবৈষম্যমূলক আচরণ করা উচিত।


চিনের ইঙ্গিত যে পাকিস্তানের দিকে তা বলাই বাহুল্য। কারণ, এক হাতে যেভাবে চিন ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বাধা সৃষ্টি করছে, ঠিক অন্য হাতে নাম না করে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির হয়ে জোরালো সওয়ালও করে চলেছে।


এনএসজির ৪৮-সদস্য রাষ্ট্রের অধিকাংশ ভারতের অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করলেও, চিন প্রথম থেকেই বিরোধিতা করে আসছে। মূলত, চিনের আপত্তির জন্যই ভারত এই এলিট সংগঠনের সদস্য হতে পারছে না। কারণ, এনএসজি-র সংবিধান অনুযায়ী, কেবলমাত্র ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নতুন সদস্য যোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।


চিন জানিয়েছে, সর্বসম্মত ও ভেদাভেদহীন সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর জন্য আলোচনার পথ সবসময় সমর্থন করে তারা। বেজিংয়ের প্রস্তাব, নন-এনপিটি দেশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দু-দফা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে, অন্তর্ভুক্তির জন্য বিশেষ নীতি প্রণয়ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক দেশের আবেদন পৃথকভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।