লন্ডন:  করোনাভাইরাস নিয়ে প্রকাশ্যে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা নিয়ে ফের কাঠগড়ায় চিন।


মার্কিন বিদেশ দফতরের হাতে এসেছে এমন কিছু নথি, যাতে বলে হয়েছে, কোভিড অতিমারীর পাঁচ বছর আগে থেকে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন চিনা সামরিক বিজ্ঞানীরা। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রে। 


প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, চিনা প্রশাসন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করেছিল। আর তা থেকে মারণ জৈব অস্ত্র তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল বেজিং।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রশাসনের কাছে যে নথি এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালে চিনের সামরিক বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্য আধিকারিকদের লেখা একটি রিপোর্ট, যেখানে তাঁরা কোভিড-১৯ ভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত করেছেন।


সংবাদপত্রের দাবি, চিনা বিজ্ঞানীদের রিপোর্টে সার্স করোনাভাইরাসকে নতুন প্রজন্মের জেনেটিক অস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 


সাধারণত, করোনাভাইরাস পরিবারে একাধিক সদস্য রয়েছে। এই ভাইরাসগুলি মূলত মনুষ্য শরীরে শ্বাসপ্রশাসের সমস্যা তৈরি করে। সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে সার্স -- এসব এই পরিবারের সদস্য। 


সংবাদপত্রের দাবি, মার্কিন প্রশাসনের হাতে আসা চিনা রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, চিনা বিজ্ঞানীরা এমন একটা জৈব অস্ত্র তৈরি করতে চাইছিলেন, যা শত্রুর মেডিক্যাল ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেবে। 


চিনা বিজ্ঞানীরা নিজেদের রিপোর্টে প্রাক্তন মার্কিন বায়ুসেনা কর্নেল জে আইন্সকফের উল্লেখও করেন, যিনি একসময় বলেছিলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে তা জৈবঅস্ত্র দিয়ে হবে। 


চিনা বিজ্ঞানীরা তাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ করেন, ২০০৩ সালে চিনে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাস আদতে ছিল একটি মানুষের তৈরি জৈব অস্ত্র যা সন্ত্রাসবাদীরা ব্যবহার করেছিল। 


প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ভাইরাসের খোঁজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলেছিলেন, যে কোনও প্রচলিত ভাইরাসের মধ্যে নতুন ভাইরাসকে কৃত্রিমভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া সম্ভব। এরপর তাকে অস্ত্রে পরিণত করে ছেড়ে দিতে হবে। যা ঘটবে তা অকল্পনীয়।


প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের শেষ দিকে উহান শহরে এই মারণভাইরাসের প্রথম আবির্ভাবের দাবি করেছিল চিন। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় পৌনে ১৬ কোটি মানুষের শরীরে হানা দিয়েছে এই ভাইরাস। মারা গিয়েছেন ৩২ লক্ষাধিক।


সংবাদপত্রের এই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে চিনকে তীব্র আক্রমণ করেন অস্ট্রেলীয় সাংসদ টম তুগেনদাত। তিনি বলেন, জৈব অস্ত্রের প্রতি চিনের আগ্রহ মারাত্মক চিন্তার বিষয়। কঠোর নিয়ন্ত্রণিত পরিবেশেও এই অস্ত্র অত্যন্ত বিপজ্জনক। তিনি যোগ করেন, কোভিড-১৯ উৎস নিয়ে চিনের স্বচ্ছতার অভাব এই তত্ত্বকে আরও জোরদার করছে।


অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা পিটার জেনিংস বলেন, কোভিড-১৯ এর উৎসের তদন্তে বিশ্বকে অন্তর্ভুক্ত করতে ঠিক একারণেই রাজি হচ্ছিল না চিন। এটা হতেই হবে যে, সামরিক কারণে ব্যবহারের জন্য রাখা এই ভাইরাস কোনওভাবে দুর্ঘটনাবশত বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। 


যদিও, অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনার জবাব দিয়েছে চিন। বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় চিন-বিরোধী কিছু শক্তি রয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাচ্ছে চিনকে বিশ্বের সামনে ছোট করতে। একটা কাল্পনিক ষড়যন্ত্রকে সত্যের রূপ দেওয়া হচ্ছে।