ওয়াশিংটন: সারা বিশ্ব এতদিন হাপিত্যেশ করেছিল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের জন্য। কয়েকটি দেশে টিকা দানের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে আমেরিকাও। সেই আমেরিকারই এক ফার্মাসিস্ট জেনেবুঝে নষ্ট করলেন করোনা ভ্যাকসিনের ৫০০-রও বেশি ডোজ। এই অভিযোগে মিলাওয়াউকির বাইরের একটি হাসপাতালের ওই ফার্মাসিস্টকে বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বেপরোয়াভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, প্রেসিক্রিপশনভূক্ত ওষুধের বিকৃতি ঘটানো, সম্পদের ধ্বংসের মতো প্রাথমিক অভিযোগ ওই ফার্মাসিস্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বিভাগের বিবৃতি অনুযায়ী, তাঁকে কাউন্টি জেলে রাখা হয়েছে। গ্রাফটন, উইসের অরোরা মেডিক্যাল সেন্টারের এই ঘটনায় সারা দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। কারণ, করোনা টিকার ডোজ এখনও পর্যাপ্ত নয়। সীমিত সরবরাহ থেকে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা ব্যক্তিদের টিকাদানের কাজ চলছে। নষ্ট হওয়া ওই ডোজগুলির মূল্য কর্তৃপক্ষের হিসেবে ১১ হাজার ডলারের মতো। তবে অতিমারীর মুখে বিপদের মুখে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার কাজে এর মূল্য অপরিসীম।
এভাবে নষ্ট করার ফলে কয়েকশ মানুষের ভ্যাকসিন প্রদানে বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ওই ফার্মাসিস্টকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত লিখিতভাবে জানিয়েছে যে, ‘সঠিকভাবে সংরক্ষিত না রাখলে ভ্যাকসিন অকার্যকরী হয়ে পড়বে জেনেই’ তিনি ভ্যাকসিনের ৫৭ ভায়াল সরিয়ে দিয়েছিলেন। পুলিশ অভিযুক্তের নাম এখনও প্রকাশ করেনি।
অরোরার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা প্রথমে ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্য সম্পর্কে নীরব ছিলেন। কিন্তু ওই ব্যক্তির আচরণ সম্পর্কে একের পর এক তথ্য উঠে আসায় চোখ কপালে ওঠে। প্রথমে গত শনিবার টিকার ওই ৫৭ ভায়াল ফ্রিজের বাইরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন মনে হয়েছিল, ভুলক্রমেই তা হয়েছে।প্রত্যেক ভায়ালে যা থাকে, তা ১০ টি টিকাদানের জন্য পর্যাপ্ত। ঘরের তাপমাত্রায় সেগুলি ১২ ঘন্টা থাকতে পারে। কিন্তু একবার গলে গেলে তা আর নতুন করে জমাট বাঁধানো যায় না।
বেশ কয়েকশ ডোজ বাতিল হয়েছে, কিছু দ্রুত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অরোরা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
গত বুধবার স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ওই কাজ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জানানো হয় যে, ওই ভায়ালগুলি একবার নয়, দুবার সরানো হয়েছিল। ফলে গত শনিবার যে সমস্ত টিকা দান হয়েছিল, সেগুলির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অরোর হেল্থ কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ওই ফার্মাসিস্টকে বাজে লোক বলে অভিহিত করেছেন।
গ্রাফটন পুলিশের তদন্তের কাজে এফবিআই ও ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্টেশন সহয়তা করছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রথমে তা নিছক ভুল বলে মনে হলেও পুরো ঘটনার পর্যালোচনায় ওই ব্যক্তির আচরণ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। গত বুধবার ওই কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে অভিযুক্ত ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্যাকসিন সরানোর কথা স্বীকার করেন।