কলকাতা: দীর্ঘদিনের কলকাতার বাসিন্দা। বাড়ি ছিল ঢাকুরিয়ায়। দুর্গাপুজোর শুরুটাও হয়েছিল সেখানেই। ষাটের দশকের মাঝামাঝি শুরু হয়েছিল চক্রবর্তী পরিবারের সেই পুজো। ১৯৬৫ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা সেই পুজো চলেছে। কিন্তু তারপর পুজো বন্ধ হয়ে যায়। কারণ ঢাকুরিয়ার বাড়ি ছেড়ে চলে যায় পরিবারের পরবর্তী প্রজন্ম।


কবে শুরু এই পুজো:
চক্রবর্তী পরিবারের সদস্য পিয়ালি চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, কলকাতার বাড়িতে রসিকচন্দ্র চক্রবর্তী এই পুজো শুরু করেছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখে এই পুজো শুরু করেছিলেন। যাবতীয় নিয়ম-নীতি মেনেই এই পুজো হতো। সুমন চক্রবর্তী সম্পর্কে রসিকচন্দ্র চক্রবর্তীর একমাত্র নাতি। এর আগে সুমনবাবুর বাবা ও জ্যাঠামশাই মিলে কলকাতার বাড়িতে ওই পুজো করতেন। তারপরে কাজের সূত্রে সুমন চক্রবর্তী বিদেশে চলে আসেন। ফলে লোকের অভাবে ঢাকুরিয়ার (Dhakuria) বাড়িতে পুজো বন্ধ হয়ে যায়।   


যদিও এই পুজো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাটা ছিল ষোলোআনা। কিন্তু কানাডায় তখন লড়াই চলছে থিতু হওয়ার। লোকজনও ছিল না। এরপর সুমন চক্রবর্তী এবং তাঁর পরিবার থিতু হয় কানাডার টরন্টোয়। ২০১৭ সালে ফের শুরু হয় চক্রবর্তী বাড়ির পুজো। তবে কলকাতায় নয়, কানাডায় (Canada)। পুরনো স্মৃতি না ভুলতে, শিকড় বাঁচিয়ে রাখতে ফের শুরু হয় পুজো। সমস্ত ঐতিহ্য মেনে হয় এই দুর্গাপুজো। নতুন করে শুরু হওয়ার পরে ২০২২ সালে ছয় বছরে পড়ল এই পুজো। বিদেশে বাঙালির উৎসব এখন জমজমাট। কানাডায় থাকা প্রচুর বাঙালি আজ ভিড় জমায় চক্রবর্তী বাড়ির দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2022)। ওই পুজো ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন প্রবাসীরা।


কীভাবে পুজো:
সুমন চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, কলকাতায় যে প্রথা মেনে দুর্গা পুজো হয়ে এসেছে। সেভাবেই করার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে পদ্ম জোগাড় করা, দশকর্মার জিনিস জোগাড় করার চেষ্টা করা হয়। সারা বছর ধরে তার খোঁজ চলে। এই পুজোর জন্য তিনি তাঁর পারিবারিক পুরোহিতকে বিশেষভাবে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।


দেবী প্রতিমা এসেছে কৃষ্ণনগর থেকে। ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালে ৬ বছরে পড়েছে পুজো। এখন টরন্টোর বাঙালি সমাজে চক্রবর্তী বাড়ির পুজো অত্যন্ত পরিচিত নাম। ওই পুজো ঘিরে এক জায়গায় আসেন প্রবাসী বাঙালিরা।


আরও পড়ুন: ছৌ মুখোশ-পটচিত্র-শোলার কদমে সাজছে আড্ডা'র পুজো, বিলেতের মাটিতে জায়গা বাংলার লোকশিল্পের