কাঠমাণ্ডু: এভারেস্টে ‘ট্রাফিক জ্যাম’! শুনতে অবাক লাগলেও বিষয়টা সত্যি। সম্প্রতি শিখর স্পর্শ করার জন্য বহু পর্বতারোহীর ভিড়, খারাপ আবহাওয়া, ইত্যাদির জেরে পথ ক্রমেই দুর্গম হয়ে উঠছে। বাড়ছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের পথে এই ‘ট্রাফিক জ্যাম’। দু সপ্তাহের কিছু বেশি সময়ে অন্তত ১০ আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শৃঙ্গজয়ের পথে। এই ঘটনার জন্য অতিরিক্ত অনুমতিপত্র দেওয়াকেই দায়ী করলেন বিপদের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা এক আরোহী। অমিশা চহ্বান নামে এক ভারতীয় এভারেস্ট যাত্রীও ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়েন। তারপর বিপদ থেকে কোনওক্রমে বেঁচে এখন হাসপাতালে তিনি।

তাঁর মতে, ইদানীং নেপাল এমন বহু আরোহীকে এভারেস্ট ওঠার ছাড়পত্র দিয়েছে, যাদের পর্বত আরোহনের সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই। তাই কাউকে অনুমতি দেবার আগে আরও বিবেচনা করা দরকার বলে মনে করছেন অমিশা চহ্বান নামে ওই এভারেস্ট যাত্রী।
এবার নেপাল ৩৮১ জন অভিযাত্রীকে এভারেস্টে ওঠার ছাড়পত্র দিয়েছে, যা কিনা রেকর্ড! ওই অভিযাত্রীর মতে, তাঁদের অনেকের পর্ব আরোহনের বিশেষ প্রশিক্ষণ নেই। তাতে তাঁরা নিজেদের জীবন তো বটেই, বিপদে ফেলছেন শেরপাদেরও।



২৯ বছর বয়সী ওই ভারতীয় এভারেস্ট যাত্রীকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় নামার সময়।  অনেককেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে থাকতে হয়। অমিশা বলেন, ‘আমি অনেককে দেখেছি যাঁদের সাধারণ প্রশিক্ষণটুকুও নেই, পুরোপুরি শেরপাদের উপর নির্ভর করেই তাঁরা এভারেষ্ট জয়ের লক্ষ্যে নেমেছে।। এভারেস্টে ওঠার ছাড়পত্র দেবার ব্যাপারে সরকারের আরও কড়া হওয়া প্রযোজন।’
এত ভিড়ের ফলে মৃত্যুর আশঙ্কা ভীষণ বেড়ে যায় বলে মত ওই পর্বত আরোহীর। "ডেথ জোন"-এ অপেক্ষা করতে হয় বহুক্ষণ। এভারেস্টে ট্রাফিক জ্যামে আটকে বহু আরোহীর অক্সিজেনের ভাঁড়ারে টান পড়ে। তা সত্ত্বেও অনেকে নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে শৃঙ্গ ছুঁতে চাইছিলেন, বলে জানান ওই অভিযাত্রী।
অন্য একজন অ্যাডভেঞ্চার ফিল্মমেকার অভিযাত্রী এলিয়া সইকালি, ইনস্টাগ্রামে তাঁর এভারেষ্ট অভিযানের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। মৃত্যু, ভিড়ভাট্টা, লম্বা লাইন, পথে মৃতদেহের সারি – সবমিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। ইদানীং এভারেস্ট অভিযান একটা ব্যবসা হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ বহু অভিযাত্রীর। তার জেরে, ঝুঁকির মুখে পড়ছে বহু জীবন। ১২ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে বহু অভিযাত্রীকে। তাই নামার পথে মৃত্যু হচ্ছে বহু আরোহীর।