করাচি:  কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করতে কেউ কাউকে বাধ্য করতে পারে না। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের প্রতি বার্তা সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের। হোলিতে হিন্দুদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে শরিফ বলেছেন, বলপূর্বক ধর্মান্তর ও অন্য ধর্মের প্রার্থনাস্থান ধ্বংস করা ইসলামে অপরাধ।
হোলি উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শরিফ বলেছেন, কে স্বর্গ বা নরকে যাবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কারুর কাজ নয়। পৃথিবীতে পাকিস্তানকে স্বর্গ হিসেবে গড়ে তোলাই একমাত্র কর্তব্য।
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে গুরুত্ব দেয় ইসলাম। কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা অপরাধ। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের প্রার্থনাস্থান রক্ষা করাই আমাদের কর্তব্য।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রথমসারির নেতৃবৃন্দ ও সংখ্যালঘু জনপ্রতিনিধিরা। শরিফ বলেন, পাকিস্তানে দেশকে প্রগতির পথে যাঁরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের লড়াই চলছে। তিনি বলেছেন, ধর্ম নিয়ে পাকিস্তানে কোনও লড়াই নেই। ধর্মকে ব্যবহার করে যে সব দুষ্কৃতী ও সন্ত্রাসবাদী মানুষকে ভুলপথে চালিত করছে এবং নিরীহ মানুষদের খুন করছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, দেশের অগ্রগতি চায় না ওই অশুভ শক্তিগুলি।
শরিফ স্বীকার করেছেন যে, অতীতে কিছু দুষ্কৃতী ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করেছিল। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানে প্রত্যকেরই নিজস্ব ধর্ম পালন ও ধর্মীয় স্থানে যাওয়ার অধিকার রয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে যে, গ্রামীন এলাকায় তাদের লোকজনকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে এবং মহিলাদের অপহরণ করে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এবার করাচিতে হিন্দুরা হোলি পালন করেছেন। এই উপলক্ষ্যে সমগ্র শহরেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়েছে। নির্বিঘ্নে এভাবে হোলি উদযাপিত হওয়ায় তাঁর সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন শরিফ। 'হ্যাপি হোলি' বলে তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে শরিফ তাঁর প্রিয় হিন্দি গান ‘বাহারোঁ ফুল বরসাও’ গানের প্রসঙ্গে এল কে আডবাণীর কথাও উল্লেখ করেছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কয়েক দশক আগেও তিনি মহম্মদ রফির মতোই ওই গানটি গাইতে পারতেন।