লন্ডন: জিনগত ক্রুটির শিকার হয় অনেক শিশুই। তার পরিণতি অনেক সময় বিস্ময়কর হয়ে থাকে। কিন্তু তা বলে কোনও শিশুর লিঙ্গই বদলে যাবে, এমন ঘটনা কল্পনাতীত। কিন্তু অকল্পনীয় হলেও এমনই ঘটনা ঘটছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের একটি গ্রামে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে যাওয়ার পরই মেয়েরা হয়ে যাচ্ছে ছেলে!

ডোমিনিকান রিপাবলিকের লাস সালিনাস নামের ওই অখ্যাত গ্রাম রাতারাতি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। সেখানে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর পর কিশোরীদের শরীরে তৈরি হচ্ছে পুরুষাঙ্গ। তারা হয়ে উঠছে ছেলে। এ ধরনের অদ্ভূত ঘটনা এই গ্রামে বিরল নয়। প্রায় ৯০ জন শিশু এ ধরনের জিনগত ক্রুটি নিয়ে জন্মেছে।

স্বাভাবিকভাবে মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে ওঠার এই ঘটনা ‘গুয়েভেডোসেস’ নামে পরিচিত। এর অর্থ, ১২-তে পুরুষাঙ্গের উত্পত্তি। সোজা কথায়, জিনগত ত্রুটির কারণে জন্মের সময় কোনও শিশুর মধ্যে মেয়ের লক্ষ্মণ থাকলেও পরবর্তীকালে তার শরীরে বয়ঃসন্ধিতে ছেলে-সুলভ লক্ষ্মণের স্ফূরণ ঘটে। অর্থাত্, ওই শিশুর শরীরে পুরুষসুলভ লক্ষ্মণগুলি লুকানো অবস্থায় থাকে।

লাস সালিনাম গ্রামের এই জিনগত ক্রটির শিকার এক শিশু জানিয়েছে, সে মেয়ে হিসেবেই বড় হয়েছে। কিন্তু মেয়েদের পোষাক-আশাক পরতে তার এতটুকু ভালো লাগত না। সে ছেলেদের সঙ্গেই খেলাধুলো করতে ভালোবাসত।

চিকিত্সাবিজ্ঞান অনুযায়ী, মাতৃগর্ভে থাকার সময় একটি বিশেষ উত্সেচক পুরুষ  যৌন হরমোন তৈরি করে। কিন্তু এক্ষেত্রে ওই উতসেচকটি ভ্রুণের মধ্যে অনুপস্থিত থাকে।ফলে মেয়েদের মতো লক্ষ্মণ নিয়ে ওই ধরনের বিশেষ শিশুগুলি জন্মগ্রহণ করে।

কিন্তু বয়ঃসন্ধিতে টেস্টোটেরনের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং ১২ বছর বয়সের সময় তা পুংলিঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

১৯৭০-র দশকে ডক্টর জুলিয়ান ইমপারেটো এই গ্রামে এসে প্রথম গুয়েভেডোসেস-এর ঘটনা লক্ষ্য করেছিলেন।