পোর্ট অ প্রিন্স: হাইতিতে বিধ্বংসী ভূমিকম্প। শনিবারের এই প্রবল ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে তিনশোর বেশি মানুষের। রিখটার স্কেলে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০৪ জন বলে জানা গেছে। ধ্বংসস্তুপে আটকদের উদ্ধার করতে জোর প্রয়াস চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দলগুলি। ২০১০-র শক্তিশালী ভূমিকম্পের ক্ষতি এখনও সামলে উঠতে পারেনি হাইতি। তারই মধ্যে ফের জোরাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল এই দেশ। 


কম্পনের উৎসস্থলে ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে গিয়েছে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা সুরক্ষার জন্য ত্রস্ত হয়ে ওঠেন। ঘন জনবসতিপূর্ণ হাইতির রাজধানী পোর্ট অ প্রিন্স থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে ছিল কম্পনের উৎসস্থল। সংবাদসংস্থাকে স্থানীয় এক তরুণ জানিয়েছেন, প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে। অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি। 


২১ বছরের ওই তরুণ বলেছেন, আমি বাড়িতেই ছিলাম, হঠাৎ করেই কাঁপতে শুরু করল সবকিছু। আমি জানালার কাছে ছিলাম। দেখলাম সবকিছু হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে। আমার পিঠের ওপর পড়ে গেল দেওয়ালের একটা অংশ। যদিও আমার কিছু হয়নি। 


দীর্ঘ ও প্রাথমিক কম্পন বেশিরভাগ ক্যারিবিয়ানরাই বুঝতে পেরেছিলেন। হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিম উপদ্বীপে প্রচুর ঘরবাড়ি, স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কম্পনের পর সময় যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। প্রথমে জানা গিয়েছিল যে, ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর দেশের সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মৃতের সংখ্যা ৩০৪। 


মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এজেন্সি জানিয়েছে, বহু মানুষ জখম ও নিখোঁজ। কম্পনের উৎসস্থল দেশে সাউথ ডিপার্টমেন্টেই মৃত্যু হয়েছে ১৬০ জনের। প্রাথমিকভাবে পেশাদার ও স্থানীয় উদ্ধারকারীদের চেষ্টায় বহু মানুষকে ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করে আনা হয়। হাসপাতালে জখমদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। 


আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার। এই অবস্থায় ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে স্থান সঙ্কুলানের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে জখমদের চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনটি পুর এলাকায় হাসপাতালগুলিতে আর কোনও বেড খালি নেই বলে জানিয়েছেন এজেন্সির প্রধান জেরি চান্ডলার। 


প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে হাইতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। আমেরিকায় হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রেসেডিন্ট জো বিডেন হাইতিতে জরুরি সাহায্যের অনুমোদন দিয়েছেন।