কাবুল: আফগানিস্তানের দুই-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যেই তালিবানের দখলে। কিছুদিনের মধ্যেই রাজধানী কাবুলও তালিবানের দখলে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক মহলের। তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের দখল যাওয়ার পাশাপাশি ফের বিভীষিকাময় দিনগুলি ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের যে অংশগুলি তালিবানের দখলে চলে গিয়েছে, সেখানে মহিলাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তালিবানের পক্ষ থেকে ফতোয়া জারি করা হয়েছে, কোনও মহিলা একা বাড়ির বাইরে যেতে পারবেন না। কোথাও যেতে হলে পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে যেতে হবে। এমনকী, মহিলারা পুরো পা ঢাকা জুতো না পরলেও তালিবানের রক্তচক্ষুর সামনে পড়তে হচ্ছে। উত্তর আফগানিস্তানের তখর প্রদেশ থেকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কাবুলে পালিয়ে আসা এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, তালিবান তাঁদের অঞ্চল দখল করার পর পুরনো দিন ফিরিয়ে এনেছে। মহিলারা একা বাইরে যেতে পারছেন না। কয়েকদিন আগেই মোটরচালিত রিকশা থেকে কয়েকটি মেয়েকে জোর করে নামিয়ে চাবুক মারে তালিবানিরা। কারণ, মেয়েগুলি পুরো পা ঢাকা জুতো পরেনি।


২০০১-এ তালিবান আফগানিস্তানের দখল হারানোর আগে পর্যন্ত নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছিল। মহিলাদের পড়াশোনা বা চাকরি করার অধিকার ছিল না। কেউ তালিবানের ফতোয়া অগ্রাহ্য করলেই চাবুক মারা হত বা হত্যা করা হত। তালিবানি শাসনের সেই দিনগুলি ফিরে আসছে।


আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেজ। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, ‘তালিবানের দখলে যে অঞ্চলগুলি রয়েছে, সেখানে মানবাধিকারের উপর নানারকম বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে। বিশেষ করে মহিলা ও সাংবাদিকদের নিশানা করা হচ্ছে। আমি এই ঘটনায় প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন।’


আফগানিস্তানের অনেকগুলি প্রদেশের রাজধানী এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কন্দহর দখল করার পর এবার কাবুলের দিকে এগোচ্ছে তালিবান। দেশে অস্থিরতা, হিংসা এবং অসংখ্য মানুষের বাড়িছাড়া হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। তিনি তালিবানের আগ্রাসন রোখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তোলার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট।