নয়াদিল্লি:   ছোট্ট এক শিশুর গাড়িতে বসে আকুল কান্না। অশ্রুবিন্দুতে ঝরে পড়ছে  অসহায় অভিমান। কোয়াদেন বেইলিস নামের ছোট্ট ওই শিশু গাড়িতে বসে রয়েছে মা ইয়ারাকা বেইলিসের সঙ্গে। ছোট্ট ওই শিশুকে যেন গ্রাস করেছে অবসাদ।  কাঁদতে কাঁদতেই সে যা বলছে, তা শুনলে আঁতকে উঠতে হয়। ফোঁপাতে ফোঁপাতে একরাশ   বিতৃষ্ণা উগরে গিয়ে বলছে, 'কেউ যদি আমার বুকে ছুরি মেরে দিত। আমি চাই আমাকে কেউ মেরে ফেলুক'। কোয়াদেনের মাত্র নয় বছরের মধ্যেই জীবনটা যেন বোঝা হয়ে উঠেছে ।  এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন ইয়ারাকা বেইলিস। হৃদয় তোলপাড় করা এই ভিডিওটি শেয়ার করে অস্ট্রেলিয়ার ওই মহিলা দেখাতে চেয়েছেন, কাউকে উত্যক্ত করার মারাত্মক পরিণতি।


জন্ম থেকেই খর্বকায় কোয়াদেন। জন্মাবধি অ্যাকনড্রোপ্লাসিয়া ডোয়ার্ফইজমে আক্রান্ত সে। আর এজন্য স্কুলের সহপাঠীরা তাকে উত্যক্ত করে। ঘটনার দিন এক সহপাঠী তার উচ্চতা নিয়ে খোঁটা দিয়েছিল। সহপাঠীদের এই উত্কট বিদ্রুপ মানসিকভাবে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে তাকে।

দিনের পর দিন এভাবে উত্যক্ত হওয়ার পর ওইদিন নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। সহানুভূতিহীনতার দুঃসহ অভিজ্ঞতা, নিজের জন্মগত খামতিকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা ছোট্ট কোয়াদেনের কাছে পরিস্থিতি দুর্বিসহ  করে তুলেছে। বুকে জমাট বাঁধা অপমান, লাঞ্ছনা, অভিমান আর অসহায় আর্তি  ঝরে পড়ছে কোয়াদেনের অবিশ্রান্ত কান্নায়।



ছেলের ওই কান্না মায়েরও বুক ভেঙে দেয়। ইয়ারাকার গলাতেও অসহায়তা। তিনি বলেছেন, উত্যক্ত করা হলে  কারুর অবস্থা কতটা করুণ হয়ে ওঠে তা জানাতেই এই ভিডিও শেয়ার করেছেন। কান্না ভেজা গলায় তিনি জানতে অন্যদের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন, আত্মহত্যা করার চেষ্টা সহ এই কঠিন পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়!

কাঁদতে কাঁদতে ইয়ারাকা বলেছেন, উত্যক্ত করার ফল কী হয়, আমি চাই সবাই তা জানুক। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, উত্যক্ত করলে এমনই হয়। এটা বোঝাতে একটা মুহূর্তই যথেষ্ট। ভাবার সময়ও পাবেন না,  কেন শিশুরা নিজেদের শেষ করছে।

ইয়ারাকার কান্না ভেজা গলায়  নিজের চরম উদ্বেগ-আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি সবাই জানুক, একটা পরিবারের এতে কতটা ক্ষতি হয়। ওর আত্মহত্যার চেষ্টার কারণে আমাকে সর্বক্ষণ ওর ওপর নজর রাখতে হয়।

তিনি বলেছেন, আমি সাধারণত ইতিবাচক বিষয় তুলে ধরে এমন কিছু শেয়ার করি। কিন্তু আমাদের শিশুদের জীবন রক্ষা করতে আমাকে এটা করতে হল।