ওয়াশিংটন: আমেরিকান এয়ারলাইন্সে মুসলিম হওয়ায় বৈষম্যের শিকার এক যাত্রী। প্রকাশ্যে সকলের সামনে নাম ডেকে, চেয়ারের নম্বর বলে, তাঁর ওপর নজরদারির হুমকি বিমান সেবিকার। শুধু এখানেই শেষ হয়নি তাঁর হেনস্থার। বিমান থেকে সেই যাত্রীকে শেষপর্যন্ত নামিয়ে দেওয়া হয়ে বলেও অভিযোগ।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে বুধবার। বুধবার কেয়ার বা কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস বিমান সংস্থার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বরে মহম্মদ আহমেদ রাডওয়ানকে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়, কারণ তাঁর নাম থেকে বোঝাই গিয়েছিল তিনি মুসলিম।
যুক্তরাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী, বিমানে কোনও যাত্রীর সঙ্গে তাঁর ধর্ম, জাতি, দেশের ভিত্তিতে কোনও ধরনের বৈষম্য করা যাবে না। কেয়ার তাদের অভিযোগপত্রে স্পষ্ট ভাষায় দাবি জানিয়েছে, পুরো ঘটনার পূঙ্খানুপূঙ্খ তদন্ত করে দেখুক আমেরিকান এয়ারলাইন্স। এধরনের প্রতিষ্ঠিত বিমান সংস্থায় এভাবেই নিয়মিত বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় কিনা যাত্রীদের সঙ্গে। যদি হয়, তাহলে অবিলম্বেই তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। কেয়ার তাদের অভিযোগ পত্রে আরও দাবি করেছে, কোনও যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ার জন্যে বিশেষ গাইডলাইনও থাকা উচিত্।

প্রসঙ্গত, মিস্টার রাডওয়ান পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর শার্লট থেকে ডেটরয়েট যাচ্ছিলেন। যেসময় বিমানে তিনি তাঁর জায়গায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই বিমানের এক সেবিকা চেঁচিয়ে বলে ওঠেন মিস্টার রাডওয়ান, আপনার ওপর কিন্তু নজর রাখা হবে। এই কথা একবার নয়, তিন তিনবার বলেন সেই বিমান সেবিকা। এধরনের কথা শুনে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে পড়ে যান মহম্মদ আহমেদ। সেদিন বিমানের অন্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে মিস্টার রাডওয়ান জানতে পেরেছিলেন, বিমান সেবিকার তাঁর সঙ্গে যাত্রা করতে অসুবিধা হচ্ছে। এরপরই তাঁকে বিমান থেকে নামিয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়। মিস্টার রাডওয়ান জানিয়েছেন, এরপর থেকে তিনি মার্কিনীদের সঙ্গে এক বিমানে যাত্রা করতে ভয় পান। তিনি যদিও ১৩ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা, কিন্তু সেদিন তাঁর মনে হয়েছিল তিনি একজন জঙ্গি। অন্তত তাঁর সঙ্গে তেমনই ব্যবহার করা হয়েছিল।