হেগ, নেদারল্যান্ড: কুলভূষণ মামলার রায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ধাক্কা খেল পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক আদালতে এগারো জন বিচারপতি বিশিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ পাকিস্তানের সেনা আদালতের রায়ে কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করল। পরবর্তী নোটিস না আসা পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ জারি থাকবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া উচিত্ ভারতীয় দূতাবাসকেও, বলেছে আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার আদালত। এক্ষেত্রেও পাকিস্তানের আপত্তি খারিজ করে দিল হেগের আদালত। ১৯৭৭ সাল থেকেই ভিয়েনা চুক্তি মেনে চলছে ভারত-পাক। ভারত যা বলছে তা ভিয়েনা চুক্তির ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদে রয়েছে।  কুলভূষণ চর কিনা সেটাও এখনও প্রমাণিত নয়। ঘোষণা হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের। পাকিস্তান কোনওভাবেই এখনই সাজা কার্যকর করতে পারে না, মন্তব্য আদালতের।


কূলভূষণ মামলায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কড়া সওয়াল জবাবের পর আজ রায় ঘোষণা করল আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার আদালত। ভারতীয় নৌবাহিনীর এই আধিকারিকের জীবন বাঁচাতে, নয়াদিল্লি রাষ্ট্রপুঞ্জের সবচেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। ভারত সরকার নিশ্চিত ছিল , আন্তর্জাতিক আদালতের রায় ভারতের পক্ষেই যাবে, এবং তাঁরা সুবিচার দিতে পারবেন কুলভূষণকে।

ভারত আদালতে পাকিস্তানে চরবৃত্তি, নাশকতায় যুক্ত থাকার দায়ে দোষী সাব্যস্ত যাদবের মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে বাতিল করার দাবি তোলে, এমন আশঙ্কাও জানায় যে, আদালতে শুনানি পর্ব শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তানে ফাঁসিতে ঝোলানো হতে পারে প্রাক্তন ভারতীয় নৌ অফিসারকে। ৪৬ বছরের যাদবকে জোর করে আদায় করা স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে সেখানে অভিযোগ করেন ভারতের প্রতিনিধিরা। ‘বিন্দুমাত্র প্রমাণ’ ছাড়াই যাদবের ‘বিচারের নামে প্রহসন’ হয়েছে, পাকিস্তান ১৬ বার যাদবের সঙ্গে ভারতীয় কনস্যুলেটকে দেখা করতে দেওয়ার আবেদন নাকচ করেছে, এটা ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থী বলেও দাবি করেন তাঁরা।

ভারতের প্রতিনিধি আইনজীবী হরিশ সালভের অভিযোগ, যাদবকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি পাকিস্তানে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, এতে যাদবের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

যাদবকে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে গ্রেফতার করা হয় গত বছরের ৩ মার্চ, সে দেশের সামরিক আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ১০ এপ্রিল। তবে ভারতের দাবি, যাদব নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর ইরানে ব্যাবসা করছিলেন। সেখান থেকে পাকিস্তান তাঁকে অপহরণ করেছে। সাজা বাতিল করিয়ে যাদবের জীবন বাঁচাতে ৮ মে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে যায় ভারত।