সিঙ্গাপুর: সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর এই প্রথম ভারত-পাকিস্তান আলাপ আলোচনার প্রস্তাব এবং এই প্রস্তাব প্রথম উত্থাপন করল ভারত। বিগত ৫ অগাস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। উল্টে রাজ্যকে ভেঙে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ, এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপের পরই প্রতিবেশী দেশ একাধিকবার, নানাভাবে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করেছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে শুরু করে, সমঝোতা এক্সপ্রেস বাতিল করা সবই করেছে পাকিস্তান। এতেও কোনও কাজ না হওয়ায় আমেরিকা ও চীনের কাছেও নালিশ করেছে তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জ পর্যন্তও কাশ্মীর ইস্যুকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কোনও পরিবর্তনই হয়নি। ভারত কাশ্মীর ইস্যুকে বরাবরই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে ব্যাখ্যা করে এসেছে এবং এখানে কোনও তৃতীয় পক্ষের নাক গলানো কাম্য নয় বলেই আন্তর্জাতিক মহলে বার্তা দিয়েছে। ভারতের এই অবস্থানের পাল্টা খোদ পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়ে বসেন। হুঁশিয়ারি দেয় ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আলোচনার দরজা খুলে পাল্টা পাকিস্তানের ওপর চাপ তৈরি করল ভারত। সিঙ্গাপুরে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এশিয়ার নেতৃত্বদের সামনে ঘোষণা করলেন, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় রাজি। তবে এই আলাপ আলোচনা হবে ‘সভ্য’ পথে। দুই ‘সভ্য প্রতিবেশী’ দেশ যেভাবে আলাপ আলোচনা করে সেই বৈঠকে ভারত রাজি। ‘মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আলোচনা’ যে সম্ভব নয়, তাও স্পষ্ট করে দেন এস জয়শঙ্কর।
শুক্রবার এশিয়ার নেতৃত্বদের নিয়ে একটি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সেখানেই ৪০০ বিদেশী প্রতিনিধিদের সামনে তিনি বলেন, “দুই সভ্য প্রতিবেশী যেভাবে কথাবার্তা বলে, সেই প্রক্রিয়ায় আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলতে রাজি। কিন্তু, এমনটা হলে চলবে না, যেখানে কথাবার্তা হবে আবার রাতের অন্ধকারে আমার শহরগুলোয় আঘাত হানার অধিকারও থাকবে। মাথায় বন্দুক না ঠেকিয়ে কথাবার্তায় আমরা রাজি।”