হিউস্টন: ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস একসঙ্গে পালন করার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয়দের তোপের মুখে গায়ক মিকা সিংহ। এ মাসের ১২ তারিখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে একটি গানের অনুষ্ঠান রয়েছে মিকার। সেখানেই তিনি ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস একসঙ্গে পালন করার ডাক দিয়েছেন। ইন্টারনেটে একটি ভিডিও পোস্ট করে দু দেশের মানুষকেই এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মিকা। তাঁর সঙ্গে হিউস্টনের এক পাক বংশোদ্ভুত ব্যক্তিকেও দেখা গিয়েছে। এই ভিডিও পোস্ট করার পরেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন মিকা।

অনাবাসী ভারতীয়দের দাবি, মিকা ভুল সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করার ডাক দিয়েছেন। পাক সেনাবাহিনী যখন সীমান্তে নিয়মিত সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে ভারতীয় সেনা জওয়ান ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে চলেছে, তখন দু দেশের স্বাধীনতা দিবস একসঙ্গে পালন করার কথা নিষ্ঠুর রসিকতা ছাড়া আর কিছু নয়।

এ বছর প্রবাসী ভারতীয় সম্মান পাওয়া প্রখ্যাত সমাজসেবী রমেশ শাহ বলেছেন, ‘যারা ভারতের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের জন্যই স্বাধীনতা দিবস। এটা কোনওদিনই পাকিস্তানের সঙ্গে পালন করা যায় না। বিশেষ করে পাকিস্তান যখন ভারতের মাটিতে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের হামলাকে সমর্থন ও সাহায্য করছে।’

ভারতীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রাক্তন সভাপতি স্বপন ধৈর্যবান বলেছেন, ‘শিল্পীরা যদি সাধারণভাবে কোনও অনুষ্ঠানে গান গাইতেন, তাহলে কোনও কথা উঠত না। কিন্তু পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করার উপর জোর দেওয়া এবং আমাদের পাকিস্তান বলা দুর্ভাগ্যজনক ও ক্ষমার অযোগ্য।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক অনাবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘দু দেশ আলাদা। আমরা আলাদাভাবেই স্বাধীনতা দিবস পালন করি। তাছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কও ভাল নয়। দু দেশের স্বাধীনতা দিবস যদি একসঙ্গে পালন করতে হয়, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।’

অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বিপীন কুমার বলেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপোড়েন রয়েছে। মিকার যদি বিন্দুমাত্র দেশাত্মবোধ থাকে, তাহলে তিনি এই গানের অনুষ্ঠান বাতিল করুন। জীবনে টাকাই সবকিছু নয়। দেশ সবসময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী যুগল মালানি বলেছেন, ‘মিকার কথার কোনও যুক্তি নেই। ভারতের সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী হামলা চলছে আর আমরা একসঙ্গে স্বাধীনতা দিবস পালন করতে চাইছি। এটা ঠিক নয়। সন্ত্রাসবাদ ও বন্ধুত্ব একসঙ্গে হতে পারে না।’

হিউস্টনের গুজরাত সমাজের সভাপতি অ্যামি পটেল বলেছেন, ‘ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের সংগঠন হিসেবে আমরা অন্যান্য সংগঠনগুলির সঙ্গে একযোগে মিকার এই অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করছি।’