ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি: মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে পাকিস্তানে তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বিয়ের পরই শুরু হয়েছে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন ভারতীয় মহিলা। তাঁকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ বিদেশমন্ত্রকের।


মারাত্মক অভিযোগ তুললেন তাহির আলি নামে পাকিস্তানি যুবককে বিয়ে করা দিল্লির মেয়ে উজমা। গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসে ঢুকে উজমা ঝুলোঝুলি শুরু করেন, তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।


পাল্টা তাঁর পাকিস্তানি স্বামীর দাবি, স্ত্রীকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে দূতাবাসে। উজমা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে ভারতে নিরাপদে ফেরানোর ব্যবস্থা যতক্ষণ না হচ্ছে, তিনি দূতাবাস চত্বর ছেড়ে নড়বেন না।


সোমবার উজমা দাবি করেন, বন্দুকের মুখে তাহিরকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। ইসলামাবাদের এক আদালতে তাহিরের বিরুদ্ধে হেনস্থা, ভীতিপ্রদর্শনের অভিযোগ জানিয়েছেন উজমা।


জিও নিউজ-এর রিপোর্ট, উজমা বলেছেন, আমার অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্রও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এদিন সকালে দূতাবাসে উজমার সঙ্গে দেখা করেন তাহির, কিন্তু আদালতে যাননি।


মালয়েশিয়ায় নাকি উজমা, তাহিরের দেখা হয়েছিল, তাঁরা প্রেমে পড়েন। ১ মে ওয়াগা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে যান উজমা। সেখানে ৩ মে তাঁদের 'নিকাহ' হয়।


কিন্তু শুক্রবার দুজনে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনে যাওয়ার পরই ছবিটা বদলে যায়। উজমা ভিতরে ঢুকে আর নাকি বের হননি। তাহির পুলিশে অভিযোগ করেন, উজমাকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা হয়েছে।


নয়াদিল্লির পাক হাইকমিশনের বক্তব্য, অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্রে প্রকাশ, উজমা ভিজিট ক্যাটেগরিতে ভিসা পেয়েছেন। তারা জানিয়েছে, ভারতীয় মেয়েটি ভিসার আবেদন করার সময় পাকিস্তানে বিয়ের প্ল্যানের কথা জানাননি, তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে চান।


পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ইসলামাবাদের ভারতীয় কমিশন থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, ভারতীয় মেয়েটির দাবি, তাহিরকে বিয়ে করার পর তিনি জানতে পারেন, সে বিবাহিত, চার সন্তানের বাবা।


জানা গিয়েছে, এদিন ইসলামাবাদে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন উজমা। সেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁকে মাদক খাওয়ানো হয়, মারধর করা হয়।


এমনকী, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনও করা হয় বলে দাবি করেন মহিলা। উজমার দাবি, সব জানার পর তিনি বিয়েতে রাজি না হলে, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নিকাহ-নামায় সই করানো হয়।


এদিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলের দাবি, মহিলার ভাই এদিন সাহায্য চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন। মহিলাকে নিরাপদে ভারতে ফেরত আনতে পাক বিদেশ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক।