নয়াদিল্লি: যুদ্ধ থামার কোনও ইঙ্গিত তো নেই-ই, বরং গাজাকে সমাধিস্থলে পরিণত করার হুমকি দিয়েছে ইজরায়েল। সেই আবহে আবারও অশনি সঙ্কেত মিলল পশ্চিম এশিয়া থেকে। ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের যুদ্ধে এবার যোগ দিল ইয়েমেনের 'হুথি' সংগঠন। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্যালেস্তাইনের হামাস সংগঠনের সঙ্গে হাত মেলানোর ঘোষণা করল তারা। শুধু তাই নয়, ইজরায়েলের উদ্দেশে ইতিমধ্যেই তারা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র দেগেছে বলেও দাবি করেছে ওই সংগঠন।
ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধে বধ্যভূমি হয়ে উঠেছে গাজা। সেখান থেকে প্রায় ১০০০ মাইল দূরে অবস্থিত, ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে মঙ্গলবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সে দেশের বিদ্রোহী সংগঠন 'হুথি'। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলেও দাবি করেছে তারা।
গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের উপর রকেট ছোড়ে হামাস। তার পর থেকে যুদ্ধ চলছে সেখানে। এবার 'প্রতিরোধী জোটশক্তি' হিসেবে প্যালেস্তাইন এবং হামাসের সমর্থনে এগিয়ে এল 'হুথি'। কূটনৈতিক মহল জানিয়েছে, 'প্রতিরোধী জোটশক্তি'র নেপথ্যে আসলে রয়েছে ইরান। এর ফলে যুদ্ধ নয়া মোড় নিতে চলেছে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনীতিকরা। একে একে আরব দুনিয়ার অন্য দেশগুলিও সিদ্ধান্ত নিতে একরকম ভাবে বাধ্য হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার টেলিভিশনে বিবৃতি জারি করেন 'হুথি' সংগঠনের মুখপাত্র ইহাইয়া সারি। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের উদ্দেশে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তাঁদের সংগঠন। ছোড়া হয়েছে ড্রোনও। আগামী দিনে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়ানো হবে বলেও হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এই যুদ্ধে প্যালেস্তাইনের জয় সুনিশ্চিত করাই সংগঠনের লক্ষ্য বলে জানান ইহাইয়া।
এই নিয়ে তৃতীয় বার তারা ইজরায়েলের উপর হামলা চালাল বলে জানিয়েছেন ইহাইয়া। তাঁর দাবি, গত ২৮ অক্চোবর ড্রোন হামলা চালায় তারা। তার জেরে মিশরে বিস্ফোরণ ঘটে। সেই সময় 'হুথি'র দিকেই আঙুল তুলেছিল ইজরায়েল। তারও আগে ১৯ অক্টোবর যুদ্ধ জাহাজ থেকে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বলে জানায় আমেরিকার নৌবাহিনী। ইজরায়েল কোন উপায়ে তার মোকাবিলা করে, তা যদিও খোলসা করা হয়নি।
নিজেদের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরোধী বলে দাবি করে 'হুথি'। আমেরিকা, ইজরায়েল, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলাই লক্ষ্য তাদের। এর আগে, সৌদি আরবেও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তারা, ড্রান হামলা চালায়। যদিও পিছন থেকে 'হুদি'কে ইরান পরিচালনা করছে বলে দাবি কূটনীতিকদের। তাদের এই পদক্ষেপকে সৌদির আরব এবং ইরানের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ বলে অভিহিত করা হয়।
তবে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের যুদ্ধে তাদের এই যোগদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছ কূটনৈতিক মহল। কারণ এমনিতেই ইরান মদতপুষ্ট ইরাকের সশস্ত্র সংগঠনগুলি ইরাক এবং সিরিয়ায় মোতায়েন আমেরিকার সেনৈর উপর হামলা চালাতে শুরু করেছে। লেবাননের হেজবোল্লা সংগঠন ইজরায়েলি সেনার সঙ্গে লড়ছে। এবার তাতে শামিল হল 'হুথি'। ইয়েমেন যুদ্ধের সময় নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির পরিচয় দেয় তারা। হামলা চালায় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপর। ইরানই তাদের অস্ত্রের জোগান দেয় এবং প্রশিক্ষণ দেয় বলে দাবি কূটনীতিকদের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে 'হুথি'।