লন্ডন: ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর খবর দিয়েছিল জাপান। ব্রিটেনের একটি ওয়েবসাইট এমনই দাবি করেছে। বিভিন্ন নথিও প্রকাশ করেছে ওয়েবসাইটটি।


 

আজই এই ওয়েবসাইটটি নেতাজি সংক্রান্ত এই তথ্য প্রকাশ করেছে। সেই তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ১৯৪৫ সালে মার্কিন সরকারকে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দেওয়ার পর ১৯৫৬ সালে ভারত সরকারকে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয় জাপান সরকার। ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সংযুক্ত সেনাবাহিনীর কমান্ডার লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন এই তথ্য চেয়েছিলেন। ১৯৪৫ সালের ৩০ অগাস্ট তাঁর পক্ষ থেকে জাপান সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চান দক্ষিণ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সংযুক্ত স্থলবাহিনীর কমান্ডার ডগলাস ম্যাকআর্থার। জাপানের সেনাবাহিনীর ইয়োকোহামা বিভাগ নেতাজির মৃত্যুর খবর দেয়।

 

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মহারাষ্ট্রের একটি সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ৯১ বছর বয়সি গোবিন্দ তলওয়ালকার গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জাপানের আইনসভা ‘ন্যাশনাল ডায়েট’-এর পাঠাগার থেকে নেতাজির মৃত্যু সংক্রান্ত এই তথ্য পেয়েছিলেন।  সেই তথ্যই ব্রিটেনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

সেই তথ্য অনুযায়ী, জাপান সরকারের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়। সেদিন স্থানীয় সময় দুপুর একটায় বিমানটি তাইহোকু পৌঁছয়। জ্বালানি ভরার পর দুপুর দুটোয় বিমানটি ফের ওড়ে। কিন্তু মাটি থেকে ১০ মিটার উপরে যাওয়ার পরেই ইঞ্জিন বিগড়ে যায়। বিমানটি ভেঙে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।  নেতাজির সঙ্গে ছিলেন তাঁর অন্যতম সহযোগী হাবিবুর রহমান। তাঁরা দু জনেই আহত হয়েছিলেন। তবে নেতাজির আঘাত বেশি ছিল। তাঁর শরীরে আগুন ধরে গিয়েছিল এবং গলায় দু-তিনটি জায়গায় কেটে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার ১০ মিনিট পরে নেতাজিকে সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল তিনটে থেকে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। রাত নটায় নেতাজির মৃত্যু হয়।

 

১৮ অগাস্ট রাতে নেতাজির মৃত্যু হওয়ার পর ২০ অগাস্ট একটি কফিনে তাঁর মৃতদেহ রাখা হয়। ২২ অগাস্ট তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। পরদিন নিশি হনগাঞ্জি মন্দিরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়। জাপানের আইনসভায় সংরক্ষিত এই রিপোর্টই ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।