লন্ডন: ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইপেই বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর। সম্প্রতি জাপান সরকারের ৬০ বছরের পুরনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর এই তথ্য উঠে এসেছে।


সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুরহস্য নিয়ে তদন্ত করা লন্ডনের সাংবাদিক আশিস রায়ের দাবি, বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছিল নেতাজির। এবার তাঁর হাতিয়ার, জাপান সরকারের ৬০ বছরের পুরনো তদন্ত রিপোর্ট। তাঁর ওয়েবসাইটের (বোসফাইলস ডট ইনফো) তরফে প্রথমবার প্রকাশ্যে আনা হয়েছে জাপানি ভাষার ৭ পাতার ওই মূল রিপোর্ট এবং স্কেচ সহ ১০ পাতার ইংরেজি অনুবাদ।

আশিস রায়ের দাবি, জাপান সরকারের ওই তদন্ত রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাষ্ট তাইপেই বিমানবন্দর থেকে একটি বিমানে ওঠেন নেতাজি।

মাটি থেকে ২০ মিটার ওপরে ওঠার পরই বাঁ দিকের প্রপেলারের তিনটি ব্লেডের মধ্যে একটি ভেঙে যায়। যার ফলে বিকল হয়ে যায় ইঞ্জিন। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে বিমানটি। আগুনে গুরুতর আহত হন নেতাজি।

জাপান সরকারের তদন্ত রিপোর্টে স্কেচ করে দেখানো হয়েছে ঠিক কোনখানে নেতাজির বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়, বিমানের মধ্যে সুভাষচন্দ্র কোথায় বসে ছিলেন বা হাসপাতালে কোন ঘরে তাঁর চিকিৎসা হয়েছিল।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, সঙ্গী হাবিবুর রহমান ও আর একজন কোনওক্রমে নেতাজিকে বিমানের বাইরে আনেন। শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল বছর আটচল্লিশের সুভাষচন্দ্রর।

দুপুর তিনটে নাগাদ তাঁকে নিয়ে আসা হয় তাইপেই সেনা হাসপাতালের নানমন শাখায়। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সেখানে মারা যান তিনি। ২২ অগাষ্ট নেতাজির শেষকৃত্য হয় তাইপেই মিউনিসিপাল শ্মশানে।

জাপান সরকারের তদন্তে রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, শেষ সময় নেতাজির পাশে ছিলেন, হাবিবুর রহমান, সেনা হাসপাতালে শল্য চিকিৎসক সুরুতা, দোভাষি নাকামুরা ও একজিন নিরাপত্তারক্ষী। তাঁদের সামনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুভাষচন্দ্র বসু।

আশিস রায়ের দাবি, নেতাজি মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করতে শাহনাওয়াজ খানের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। সেই রিপোর্টকে সমর্থন করে জাপানি সরকারের রিপোর্ট।

নেতাজি সংক্রান্ত জাপানি সরকারের ওই রিপোর্টটি ১৯৫৬ সালের জানুয়ারি মাসেই তৈরি করা হয়। পরে তা টোকিওয়ে ভারতীয় দূতাবাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু তা গোপন রিপোর্ট ছিল, কোনও পক্ষই তা প্রকাশ করেনি।