বেজিং: দলাই লামা 'বিচ্ছিন্নতাবাদী', তিব্বতকে চিন থেকে আলাদা করতে চান। এভাবেই সওয়াল করে বেজিং শনিবার গোটা দুনিয়াকে হুঁশিয়ারি দিল, কোনও দেশ বা বিদেশি নেতা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করলে বা তাঁকে আতিথেয়তা দিলে তা 'বিরাট অপরাধ' বলে ধরা হবে।


চিন বরাবরই আন্তর্জাতিক নেতাদের দলাই লামার সঙ্গে দেখাসাক্ষাত, বৈঠকে আপত্তি করে। চিন এও জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে তিব্বতকে তার অংশ বলেই বাধ্যতামূলক ভাবে মানতে হবে।
এবছর অরুণাচল প্রদেশ সহ ভারতের উত্তরপূর্বের নানা জায়গায় সফরে যেতে দলাইকে অনুমতি দেওয়া হলেও প্রবল উষ্মা জানিয়েছিল চিন।

এদিন শাসক চিনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি শাখার এক্সিকিউটিভ উপমন্ত্রী ঝাং ইজিয়ং বলেন, কোনও দেশ বা গোষ্ঠীর দলাই লামার সঙ্গে সাক্ষাত্ করা আমাদের চোখে চিনা জনগণের আবেগের প্রতি বিরাট অসম্মান, অন্যায়।

পার্টি কংগ্রেসের ফাঁকে তিনি জানিয়ে দেন, ৮২ বছরের দলাই লামাকে বিদেশি রাষ্ট্রগুলি ও নেতারা ধর্মীয় নেতা বলে মনে করলেও চিন মানবে না। ইজিয়ং বলেন, আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, চতুর্দশ দলাই লামা ধর্মের ছদ্মবেশের আড়ালে আসলে এক রাজনৈতিক ব্যক্তি।

ভারতের নাম না করে চিনা নেতাটি বলেন, ১৯৫৯ সালে 'নিজের মাতৃভূমিকে প্রত্যাখ্যান করে' 'অন্য দেশে' পালিয়ে যান দলাই লামা, 'সেখানে তথাকথিত প্রবাসী সরকার গঠন করেন।' আর সেই তথাকথিত সরকারের উদ্দেশ্যই হল তিব্বতকে চিন থেকে বিচ্ছিন্ন করা। দশকের পর দশক সেই রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে চতুর্দশ দলাই লামার নেতৃত্বে সেই গোষ্ঠী কখনও বিরত হয়নি।

কোনও বৈধ সরকারই দলাই লামার গোষ্ঠীকে স্বীকার করেনি বলে দাবি করেন চিনা নেতাটি, পাশাপাশি বলেন, হাতে গোনা কিছু দেশ ও নেতাই তাঁকে আতিথেয়তা দেয়। কোনও কোনও দেশ বলতে পারে, উনি রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, ধর্মীয় লোক এবং তাদের প্রতিনিধিরা রাজনীতির কারণে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন না। কিন্তু কথাটা সত্যি নয়, ঠিকও নয়, কারণ প্রত্যেক প্রতিনিধিই আসলে রাজনৈতিক ব্যক্তি। সুতরাং আমরা সকলকে সংযত থাকতে বলব। চিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বহাল রাখতে তার সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানানোর কথা ভাবতেও বলব।