রাষ্ট্রপুঞ্জ: গতকালই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কাশ্মীর ছিনিয়ে নেওয়ার দিবাস্বপ্ন পাকিস্তান যেন না দেখে। স্বরাজের মন্তব্যের জবাব দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত পাক দূত মালিহা লোধি দাবি করেন, ভারতের বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তান সম্পর্কে ‘একরাশ মিথ্যে’ কথা বলেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, স্বরাজের বক্তব্য ‘ইতিহাস ও বাস্তব পরিস্থিতির পরিপন্থী’। লোধি আরও দাবি করেন, জম্মু ও কাশ্মীর কখনই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়। এটি একটি বিতর্কিত অঞ্চল এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন প্রস্তাব অনুযায়ী এই বিতর্কের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করতে হবে। পাক দূতের এই মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি বলেছে, কাশ্মীর যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, এই বার্তা পাকিস্তানের কান খুলে শুনে নেওয়া উচিত। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে ফের ভারত পাকিস্তানকে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিল। সন্ত্রাসদমনে কোটি কোটি ডলার তহবিল পাওয়ার পরও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য রয়ে গিয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে ভারত। উত্তরদানের অধিকারে ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানি দূতের  ‘কল্পনাশ্রয়ী ও বিভ্রান্তিকর’ মন্তব্যও খারিজ করে দিয়েছে।


লোধির মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি এনাম গম্ভীর বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে পাকিস্তানের মাননীয় প্রতিনিধিরা আমাদের বিদেশমন্ত্রী  তাঁর ভাষণে কী বলেছিলেন তা স্পষ্টভাবে শোনেননি’।

স্বরাজের বক্তব্য উদ্ধৃত করে গম্ভীর বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই জোরাল বার্তা খুব স্পষ্টভাবে শুনতে পেয়েছ পাকিস্তান’।

গম্ভীর বলেন, পাকিস্তান তো একটা অসফল রাষ্ট্র, যারা নিজেদের মানুষের ওপরই অত্যাচার চালায়। তারাই আবার অন্যদের সহিষ্ণুতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সম্পর্কে উপদেশ বিতরণ করে।

উত্তরদানের অধিকারের মাধ্যমে ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তানের কল্পানাশ্রয়ী ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন গম্ভীর। তিনি বলেছেন, পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ থেকে নজর ঘোরাতেই এই প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছে। ভারতীয় প্রতিনিধি আরও বলেন যে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না ইসলামাবাদ।

গম্ভীর বলেন, ২০০৪-এ ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য  জঙ্গিদের তাদের বা তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল ব্যবহার না করতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তান। তাঁর প্রশ্ন, এই প্রতিশ্রুতির কথা কি পাকিস্তান অস্বীকার করতে পারে। ভারতীয় প্রতিনিধি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ব্যবহার করছে পাকিস্তান।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১-এর যুদ্ধে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস হত্যালীলা চালিয়েছিল।