নয়াদিল্লি : কোয়াড-বৈঠকে যোগ দিতে, আমেরিকা পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদি। আজ, শুক্রবার তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারপর জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে, কোয়াড-বৈঠকে অংশ নেবেন নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ও জো বাইডেন (Joe Biden)। তার আগে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মার্কিন সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। দেখা করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ রাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের সঙ্গে।
হ্যরিসের সঙ্গে দেখা করে নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, '' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ রাষ্ট্রপতি পদে আপনার নির্বাচিত হওয়া ঐতিহাসিক ঘটনা। গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে আপনি অনুপ্রেরণা। ভারতে আসার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ''
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, ' অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ভাবনা-চিন্তা, মূল্যবোধ একধরনের। মহাকাশ নিয়ে গবেষণা সহ বহু বিষয়ে আগামী দিনে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। '' মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বললেন । অন্যদিকে হ্যারিস বলেন, '' ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। করোনা মহামারী মোকাবিলা থেকে শুরু করে বহু আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করে চলেছি। আগামী দিনেও করব। ''
মোদি আরও বলেন 'প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং আপনি দুজনেই এমন এক সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন যখন পৃথিবী কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা কৃতিত্বের সঙ্গে কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন বা QUAD"
তিনদিনের মার্কিন সফরে প্রধানমন্ত্রীর ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকের পরই নরেন্দ্র মোদিকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্দেশীয় কোয়াড-বৈঠকের উদ্বোধন করবেন বাইডেন। বৈঠকে বাইডেন এবং মোদির পাশাপাশি থাকবেন । জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার পর, সেখানে ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। যে ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে। এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক দুনিয়া কার্যত আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গেছে। তবে ভারত এখনও এনিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেনি। কূটনীতিকদের মতে,
এবার কোয়াড-বৈঠকে আফগানিস্তান ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় উঠে আসতে পারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা-সহ একাধিক বিষয়। বৃহস্পতিবার অ্যাডব, কোয়ালকমের মতো সংস্থার কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা দেবেন নরেন্দ্র মোদি। তারপর তিনি দেশে ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, এই নিয়ে সাতবার আমেরিকা গেলেন নরেন্দ্র মোদি। শেষবার তিনি আমেরিকা গেছিলেন ২০১৯ সালে হাউডি মোদি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।
তখন আমেরিকার প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, এটা নরেন্দ্র মোদির প্রথম আমেরিকা সফর। আমেরিকা যাওয়ার পথে, নিজের এই ছবি ট্যুইট করে নরেন্দ্র মোদি লেখেন, লম্বা উড়ান মানেই কাগজপত্রে চোখ বুলিয়ে নেওয়া এবং ফাইলের কাজ সেরে ফেলার সুযোগ। সঙ্গে সঙ্গে মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করেন, নরেন্দ্র মোদি এমন এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের জন্য সবসময় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান।
এরপরই প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর নাতি ও কংগ্রেস নেচা, বিভাকর শাস্ত্রী এই ছবি ট্যুইট করেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিমানের আসনে বসে কাগজপত্রে চোখ বোলাচ্ছেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী। নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে আরও একাধিক ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, রাজীব গাঁধী, পি ভি নরসিমহা রাও বিমানে কাজে মগ্ন। এমনকী, সর্দার বল্লভ ভাই পটেলের একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাঁকে বিমানে বসে কাগজপত্রে চোখ বোলাতে দেখা যাচ্ছে।