হ্যাংঝৌ: স্করপিন সাবমেরিনের তথ্য-ফাঁস নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের সঙ্গে আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।


জি-২০ সম্মেলনে হাজির হতে গত দুদিন ধরে চিনের হ্যাংঝৌ শহরে ছিলেন মোদী। এদিনই ছিল বৈঠকের দ্বিতীয় তথা শেষ দিন।

দেশে ফেরত আসার আগে এদিন ওলাঁদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা সারেন মোদী। স্বভাবতই উঠে আসে স্করপিন প্রসঙ্গ।

বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানিয়েছেন, স্করপিনের গোপন তথ্য ফাঁস নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা ওলাঁদের সামনে তুলে ধরেন মোদী।

সম্প্রতি, স্করপিন শ্রেণির সাবমেরিন সংক্রান্ত ২২ হাজার পাতার গোপন নথি ফাঁস হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার একটি দৈনিকে। এর পরই বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে যায়।

সাবমেরিনের কার্যকারিতা, ক্ষমতা থেকে শুরু শত্রুর চোখকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশল—সব তথ্যই ফাঁস হয়ে যায় বলে অভিযোগ।

তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রস্তুতকারী ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস। এই সংস্থাই ভারতীয় নৌসেনার জন্য ৬টি এই ধরনের অত্যাধুনিক সাবমেরিন তৈরি করছে। ডুবোজাহাজগুলি নির্মিত হচ্ছে মুম্বইতে।

ওলাঁদের সঙ্গে বৈঠকের আগে এদিন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়িপ এর্দোগানের সঙ্গেও বৈঠক করেন মোদী।



বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, তুরস্কের রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এনএসজি-প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

৪৮-সদস্যের নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ (এনএসজি)-তে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত।

গত জুন মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে গোষ্ঠীর বার্ষিক প্লেনারি সম্মেলনে ভারতের ইস্যুটি উত্থাপিত হয়।

কিন্তু, মূলত চিনের আপত্তিতে আপাতত ভারতের অন্তর্ভু্ক্তিকরণের ইস্যুটি আটকে যায়।

চিনের দাবি ছিল, যেহেতু ভারত পরমাণু অস্ত্রপ্রসাররোধ চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষর করেনি, তাই ভারতকে সদস্য করা সম্ভব নয়। কারণ, এই গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার প্রধান শর্তই হল এনপিটি স্বাক্ষর করা।

জানা গিয়েছে, ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে চিনের পাশাপাশি সোচ্চার হয়েছিল তুরস্কও। তাদের আবার দাবি, মুসলিম ধর্মযাজক ফতুল্লাহ গুলেনের বহু অনুগামী ভারতে বসবাস করছে।

তুরস্ক প্রশাসনের অভিযোগ, গত জুলাই মাসে তুরস্কে যে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিল এই গুলেনই। এদিন তাই তুরস্কের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সারেন মোদী।



অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।

সম্প্রতি, সংসদে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) বিল পাশ হয়েছে। বিষয়টির প্রশংসা করেন মে। জানান, এতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উন্নতি হবে।

একইসঙ্গে তিনি মোদীর মেক ইন ইন্ডিয়া, স্মার্টসিটি এবং স্কিল ইন্ডিয়া ভাবনারও প্রশংসা করেন।

বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাসদমন প্রসঙ্গও উঠে আসে দুই নেতার আলোচ্য বিষয়সূচিতে। ভারতীয়দের জন্য ব্রিটিশ ভিসা পেতে যে অসুবিধে হয়, সেই বিষয়ও ছুঁয়ে যান মোদী।