নয়াদিল্লি: মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচণ্ড নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলে অভিনন্দন জানালেন নরেন্দ্র মোদী। ফোনে তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের তরফে যাবতীয় সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন প্রচণ্ডকে। নিজেই ট্যুইট করে এ কথা জানিয়েছেন মোদী। বলেছেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচণ্ডজীর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে অভিনন্দন জানালাম।
প্রসঙ্গত, নেপালে জনপ্রতিনিধিদের ভোটে আজই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন প্রচণ্ড। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। নতুন সংবিধানকে কেন্দ্র করে একের পর এক সঙ্কট, তীব্র মতবিরোধের জেরে বিপর্যস্ত নেপালে এবার স্থিতিশীলতা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত-বিরোধী বলে পরিচিত হলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, প্রচণ্ড সাম্প্রতিক কালে কট্টর অবস্থান ছেড়ে নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে নেপালে নতুন সংবিধান কায়েম হওয়ার পর কে পি শর্মা ওলি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালে ভারত-বিরোধী হাওয়া উঠেছিল নেপালে। এবার কি তা স্তিমিত হবে?
প্রচণ্ডর প্রধানমন্ত্রী হওয়া একরকম নিশ্চিতই ছিল, তার কারণ তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী। তবে তাঁকে ভোটে লড়তে হয়েছে কেননা নেপালের সংবিধান অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সমর্থন পেতে হবে। ভোটাভুটিতে ৩৬৩ জনের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। বিপক্ষে পড়েছে ২১০টি ভোট। ৫৯৫ জন সদস্যের মধ্যে ভোট দেননি ২২ জন।
প্রচণ্ডর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে সভার সবচেয়ে বড় দল নেপালি কংগ্রেস। ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক মধেশি ফ্রন্টের শরিকরা, ফেডারেল জোট ও কয়েকটি ছোট ছোট দলও তাঁর পাশে রয়েছে।
প্রচণ্ডর জয় যাতে মসৃণ হয়, সেজন্য আগে থেকেই তিন দফা চুক্তি হয় নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন মাওবাদী সেন্টার ও মধেশি ফ্রন্টের মধ্যে। চুক্তির ফলে মধেশিদের বেশ কিছু দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হবে। যেমন, মধেশিদের আন্দোলন চলাকালে নিহতদের শহিদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আহতদের নিখরচায় চিকিত্সার ব্যবস্থা হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য সংবিধান সংশোধন করা হবে।
প্রচণ্ড ভোটাভুটির আগে প্রধানমন্ত্রী হয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে চলবেন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, আমি কথা দিচ্ছি, দেশের প্রত্যেককে ঐক্যবদ্ধ করব। এটা আমার দায়িত্ব। আমি মনে করি, দেশের সব গোষ্ঠীর মধ্যে সেতু হয়ে ওঠার ভার পড়েছে আমার ওপর।