রাবাত: ভূমিকম্পের তীব্রতা দেখে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছিলেন অনেকেই। মরক্কোর পরিস্থিতি সত্যিই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তীব্র ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ২০০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে (Morocco Death Toll)। গুরুতর আহত প্রায় ১৪০০ মানুষ। এর মধ্যে, দক্ষিণেক মারাকেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে সে দেশের সরকার। (Morocco Earthquake)


মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মহম্মদ তিন দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা করছেন। এই তিন দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। ভূমিকম্পে ভিটেমাটি হারানো মানুষজনদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কাতারে কাতারে মানুষ এই মুহূর্তে মরক্কোর রাস্তাঘাটে, খোলা আকাশের নীচেই রয়েছেন। সেখানেই রাত কেটেছে। ভূমিকম্পে সবকিছু ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে তাঁদের। (Earthquake in Morocco)







শুক্রবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মরক্কোর বিস্তীর্ণ অঞ্চল।  আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৮। কম্পনের উৎসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, মারাকেশ থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরের হয়েছে অ্যাটলাস পার্বত্য অঞ্চলের উকাইমেদেন স্কি রিসর্ট সংলগ্ন এলাকাকে। ভূগর্ভের ১৮.৫ কিলোমিটার গভীরতা থেকে ছড়িয়ে পড়ে কম্পন। এতটাই তীব্র ছিল ভূমিকম্প যে, পর্তুগাল এবং আলজিরিয়াতেও অনুভূত হয় কম্পন। এত তীব্র ভূমিকম্প, এত হতাহতের সাক্ষী আগে কখনও হতে হয়নি বলে দাবি সে দেশের সংবাদমাধ্যমের।


আরও পড়ুন: G-20 Summit: ‘ভারত মণ্ডপমে’র কারুকার্য দেখে হতবাক বাইডেন, তাঁকে কোনারক সূর্যমন্দিরের চাকার মাহাত্ম্য বোঝালেন মোদি


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ভূমিকম্প মরক্কোর ভৌগলিক চিত্রই পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের মাটি বসে গিয়ে আচমকা সমতলে পরিণত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এক বা দু'জায়গায় নয়, একের পর এক পাহাড়ি গ্রাম সমতলে পরিণত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 


মরক্কোর অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজধানী রাবাত, কাসাব্লাঙ্কা, আগাদির, এসাউইরাতেও কম্পন অনুভূত হয়। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে তারৌদান্ত প্রদেশে। সেই তুলনায় মারাকেশে হতাহতের সংখ্যা কম। UNESCO হেরিটেজ হিসেবে চিহ্নিত, ঐতিহাসিক মারাকেশ শহরকে ঘিরে থাকা লাল দেওয়ালও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। বাড়িঘর সব মিশে গিয়েছে মাটিতে। তবে শহরাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি যাও বা উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমে, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির পরিস্থিতি এখনও স্পষ্ট নয়। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য হাতে পেতে আগামী কয়েক দিন সময় লাগবে।