ইয়াঙ্গন: মায়ানমারে গত মাসে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন দমন করার জন্য নৃশংস আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে সেনাবাহিনী। শনিবার সাধারণ মানুষের উপর সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে নৃশংস হামলা চালায় সেনাবাহিনী। এই হামলায় অন্তত ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৬ বছরের কমবয়সি বেশ কয়েকজন নাবালকও রয়েছে। প্রাণ বাঁচানোর জন্য বহু মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে।
এই নৃশংস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মায়ানমারের জুন্টার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মায়ানমারের সেনাবাহিনীর এই নৃশংস হত্যা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক মহল যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও দাবি করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। রবিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেজ বলেছেন, শিশু সহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি মর্মামত। ১২টি দেশের সেনাপ্রধানের একটি গোষ্ঠীও মায়ানমারের সেনাবাহিনীর এই অত্যাচারের নিন্দা করেছে।
এরই মধ্যে রবিবারও মায়ানমারের বিভিন্ন জায়গা থেকে হিংসার খবর পাওয়া গিয়েছে। কাচিন প্রদেশের ভামো অঞ্চলে সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত ব্যক্তিদের শেষকৃত্য উপলক্ষে জড়ো হন বহু মানুষ। তাঁরা গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে সোচ্চার হন। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধেও সরব হন আন্দোলনকারীরা। মায়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গনে সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় ১৩ বছরের একটি ছেলে। সে বাড়ির বাইরে খেলছিল। সেই সময় তাকে গুলি করে নিরাপত্তারক্ষীরা। এই নাবালকের শেষকৃত্যেও সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সরব হন বহু মানুষ।
১ ফেব্রুয়ারু সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মায়ামনারে এখনও পর্যন্ত ৪০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার মায়ানমারের পূর্ব অংশে গেরিলা যোদ্ধাদের উপর বিমান হানা চালানো হয়েছে। জুন্টার দাবি, আন্দোলনকারীরা হিংসার পথ বেছে নিয়েছেন। সেই কারণেই তাঁদের উপর পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। তবে আন্দোলনকারীরা জুন্টার এই দাবি মানতে নারাজ।
এর আগে ১৪ মার্চ মায়ানমারে সেনাবাহিনীর হামলায় ৭৪ থেকে ৯০ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু শনিবারের হামলায় আরও বেশি মানুষের মৃত্যু হল।