হিউস্টন: সৌরমণ্ডলের ‘গুরু-গৃহে’ পা দিল নাসা। পাঁচ বছরের পাড়ি শেষ করে বৃহস্পতির কক্ষপথে ঢুকে পড়ল মহাকাশযান জুনো৷ পৌঁছেই বার্তা পাঠাল সৌরশক্তিচালিত এই মহাকাশযান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই মুহূর্তে এখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মেজাজ। ঠিক সেই সময় মহাকাশে তখন নতুন ইতিহাস রচনা সেদেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার।
স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় (ভারতীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে) সৌর জগতের সব থেকে বড় গ্রহের দুয়ারে পৌঁছে গেল নাসার সৌরশক্তিচালিত মহাকাশ যান জুনো।
পৌঁছেই বৃহস্পতি সম্পর্কে নানা বার্তা পাঠানো শুরু করেছে জুনো। এই সাফল্যে স্বভাবতই খুশির হাওয়া নাসায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই প্রথম তাঁদের কোনও মহাকাশ যান পৌঁছতে পারল বৃহস্পতির এত কাছে। জানা গিয়েছে, জুনো তৈরি করতে খরচ পড়েছে প্রায় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা)।
২০১১ সালের ৫ অগাস্ট ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে বৃহস্পতির উদ্দেশে রওনা হয় জুনো৷ ৮০ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সৌরশক্তিচালিত জুনো গত ৩০ জুন ঢুকে পড়ে বৃহস্পতির চৌম্বকক্ষেত্র ‘ম্যাগনেটোস্ফিয়ার’-এ। তারপর ৩৫-মিনিটের ইঞ্জিন চালিয়ে এদিন ভোরে একেবারে বৃহস্পতির দুয়ারে পৌঁছে যায় জুনো।
নাসার দাবি, অন্য কোনও গ্রহে অনুসন্ধান চালানোর জন্য এটাই পৃথিবীর প্রথম সৌরশক্তিচালিত মহাকাশযান৷ এর আগেও নাসার মহাকাশযান বৃহস্পতির পাশ দিয়ে উড়ে গিয়েছে৷ গ্যালিলিও মিশন বৃহস্পতির চারপাশে ঘুরেছে৷ গিয়েছে তার উপগ্রহগুলিতে৷ কিন্তু বৃহস্পতিকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে মহাকাশযান নাসা’র এই প্রথম৷
বৃহস্পতির চারপাশে মেঘের যে আস্তরণ দেখা যায়, তা কতটা গভীর, সে ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই মহাকাশবিজ্ঞানীদের৷ আনুমানিক ৪৬০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি হওয়া সৌরমণ্ডলের এই প্রাচীনতম গ্রহের গঠন এবং পরিবেশ সম্পর্কেও অনেক কিছু জানা বাকি৷
বৃহস্পতি থেকে যে বিশাল  পরিমাণ বিকিরণ হয়, তার পরীক্ষা করবে জুনো। এর ফলে, ওই গ্রহের ভিতর কী আছে তা জানা যাবে। পাশাপাশি, বৃহস্পতি সহ গোটা সৌরমণ্ডলের উৎস সম্পর্কেও নানা অজানা তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছেন নাসার পরিচালক চার্লি বোল্ডেন।
জুনোর পেটে রয়েছে ৯টি সুক্ষ্ম যন্ত্র, যা গ্রহের ধাতব কোর, তার বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত জল এবং অ্যামোনিয়ার পরিমাণ এবং তার চারপাশে থাকা অরোরা (ঊষা) গঠন নির্ণয় করবে। জুনো সেই সব জিজ্ঞাসার জবাব দেবে বলেই আশা নাসার৷