ক্রাইস্টচার্চ: পরপর ১১ দিন নতুন করে কোনও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি। এ জন্য নিউজিল্যান্ড সরকার আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ শিথিল করতে পারে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডের্ন মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিউজিল্যান্ড এক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।
আরডের্ন বলেছেন, আগের পরামর্শ সংক্রান্ত মডেলে ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে থাকবে এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে চলবে। আরও বেশি সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে দেশে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত দ্বিতীয় পর্ব চালু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত গত কয়েকদিনে সংক্রমণের খবর নেই।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সামনের কয়েকদিনে অপ্রত্যাশিতভাবে নতুন করে সংক্রমণের হদিশ না মিললে নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রিসভা নির্ধারিত সময়ের আগেই আগামী ৮ জুন পর্যালোচনা করবে বলে আরডের্ন জানিয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একটি।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি-র তথ্য অনুসারে,নিউজিল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৫০৪। মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
আরডের্ন বলেছেন, তিনি অ্যালার্ট লেভেল ওয়ানের বিস্তারিত চলতি সপ্তাহেই জানাবেন। তিনি বলেছেন, শারীরিক দূরত্ব ও জন সমাবেশ সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলি সরিয়ে দেওযা হতে পারে। যদিও বিদেশ থেকে নতুন সংক্রমণ আসা রুখতে সীমান্তে কড়া নিয়ন্ত্রণ বহাল থাকবে।
অ্যালার্ট লেভেল ওয়ানের অর্থ অভ্যন্তরীন পরিবহণ, জমায়েতে কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। সমস্ত স্কুল ও কাজের জায়গা খোলা থাকবে।
আরডের্ন বলেছেন, তাঁদের কঠোর ও আগাম কৌশলে কাজ হয়েছে।
আরডের্ন বলেছেন, লেভেল ওয়ানে খুব শীঘ্রই পৌঁছে যেতে চলেছে দেশ। বিশ্বে অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ড এই পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে, এত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।
গত এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড বলেছিল যে, এই ভাইরাসের প্রকোপ রোখা গিয়েছে। কারণ, তখন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কের মধ্যেই ছিল।
নিউজিল্যান্ডে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। আমেরিকায় করোনা সংক্রমন প্রথম ধরা পড়ার প্রায় এক মাস পর নিউজিল্যান্ডে এই ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ মেলে।
গত ১৪ মার্চ নিউজিল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪। আরডার্ন ঘোষণা করেন যে, বিদেশ থেকে কেউ ফিরলে তাঁকে ১৪ দিন সেল্ফ আইসোলেট থাকতে হবে। সেইসঙ্গে সীমান্ত জারি করা হয়েছিল কঠোর নিয়ন্ত্রণ। ২০ মার্চ থেকেই বিদেশিদের নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়।
২৩ মার্চ আক্রান্তের সংখ্যা একশ ছাড়ানোর পর লেভেল থ্রি লকডাউন ঘোষিত হয়েছিল। অত্যাবশ্যক পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়।
২৫ মার্চ থেকে আরও কঠোর লেভেল ৪ লকডাউন জারি হয়। অত্যন্ত প্রয়োজন না থাকলে বাড়ির বাইরে না বেরোতে বলা হয় মানুষকে। সেইসঙ্গে বলা হয় দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে।

৯ এপ্রিল আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করা হয়। বিদেশ থেকে আসা দেশের নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রে দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়।