ইসলামাবাদ: পেশোয়ার ও রওয়ালপিন্ডির রাজপথে অবতরণ পাক বায়ুসেনার যুদ্ধ বিমানের। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা পাকিস্তানজুড়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উরি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ‘সাজ সাজ’ রব তুলেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। যুদ্ধের আশঙ্কা এতটাই ছড়িয়েছে যে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে বলে ইসলামাবাদের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে। সামরিক আধিকারিকরা বলছেন, এটা রুটিন মহড়া মাত্র। কিন্তু  এতে সংশয় কাটছে না।


দেশের বিভিন্ন মহলে সংশয় ছড়িয়ে পড়ার পরও পাক বায়ুসেনার মিডিয়া ডিরেক্টরেট মুখে কুলুপ এঁটেছে। সরকারি স্তরের নীরবতা জল্পনার আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে বলে ডন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

যদিও এক পদস্থ সামরিক আধিকারিক সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছেন যে, বিগত কয়েকদিনে সতর্কতার মাত্রা বাড়ানোর কোনও খবর নেই। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ভারতের সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে ‘চূড়ান্ত নজরদারি’ চলছে। ডন জানিয়েছে, বায়ুসেনার এই মহড়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জানানো হবে।

পেশোয়ার থেকে রওয়ালপিন্ডিগামী ১৫১ কিমি দীর্ঘ ইস্ট-ওয়েস্ট সড়ক এবং রাজধানী ইসলামাবাদের সঙ্গে লাহৌরের সংযোগকারী ৫০ কিমি দীর্ঘ সড়কে পাক বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলির অবতরণ ও উড়ান ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে। সামরিক আধিকারিকরা বলেছেন, এটা ‘হাইমার্ক’ নামে রুটিন প্রশিক্ষণ মহড়া। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই মহড়া হয়। এটাই পাক বায়ুসেনা বাহিনীর সবচেয়ে বড় মহড়া। এরজন্য কয়েকমাস আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এই মহড়ার জন্যই দেশের উত্তরাংশে পাকিস্তানের অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এরফলে গিলগিট-বাল্টিস্তান ও স্কার্দুতে বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেয়  সেদেশের সরকারি সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) ও অন্যান্য সংস্থা। পিআইএ-র এক পদস্থ আধিকারিক ডন-কে জানিয়েছেন, এই আকাশসীমা বন্ধের নোটিশ তিনদিন আগে দেওয়া হয়েছিল।

পাক বায়ুসেনার এই মহড়ার জন্য দুটি সড়কও বন্ধ রাখার কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও মোটরওয়ে পুলিশ প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে একদিন আগে জানিয়েছিল। তবে, এর কারণ হিসেবে জানানো হয় যে, নির্মাণ কাজের জন্য সড়ক বন্ধ থাকবে।

সব মিলিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় জল্পনার মাত্রা চড়ছে। সড়কে মিরাজ জেটের অবতরণ ও উড়ানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হচ্ছে। উরিতে সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। এরইমধ্যে আকাশসীমা বন্ধ করা এবং তারপর এই মহড়া পাকিস্তানজুড়ে জল্পনা চলছে যে, সেদেশের সশস্ত্র বাহিনী ভারতের সম্ভাব্য আক্রমণ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।