ইসলামাবাদ: চাপে পড়ে অবশেষে জঙ্গিদের ধরপাকড় শুরু করল পাকিস্তান। পুলওয়ামা সন্ত্রাসের দায় স্বীকার করা জইশ-ই-মহম্মদকে টার্গেট করেছে ইমরান খান সরকার। পাকিস্তানে জইশ প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের এক ভাই সহ ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। এদের অনেকেই তার আত্মীয়স্বজন বলে দাবি সূত্রের।
পুলওয়ামার নাশকতার পর পাকিস্তানের ওপর ভারত সহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। পাক ভূখণ্ডে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো ধ্বংসের পাশাপাশি তাদের আর্থিক মদত, সহায়তা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। লাগাতার চাপে কোণঠাসা হয়েই পাকিস্তান জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির লোকজনকে গ্রেফতারির পথে হাঁটতে বাধ্য হল বলে মনে করা হচ্ছে।
পরে অবশ্য পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ওদের আগাম আটক করা হয়েছে তদন্তের জন্য। অর্থাত ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ভারতের এজেন্সিগুলি গ্রেফতারির খবরে প্রতিক্রিয়া দিয়ে আগেই বলেছে, ওদের সন্ত্রাস দমন আইনে গ্রেফতার করা হয়নি, তদন্তের জন্য আগাম হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ফলে এটা প্রহসন। অতীতেও এরকম বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর লোকজনকে ধরে হেফাজতে নিয়েছিল, কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই কোনও না কোনও ছুতোয় ওদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ প্রতিমন্ত্রী শেহরিয়ার খান আফ্রিদি মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, মাসুদের ভাই মুফতি আবদুর রউফ, হাম্মাদ আজহার রয়েছে ধৃতদের মধ্যে। ভারত দিনকয়েক আগে পাকিস্তানকে যে ডসিয়ার বা তথ্যপঞ্জি দিয়েছে, তাতেও ওই দুজনের নাম আছে বলে জানান আফ্রিদি। তিনি অবশ্য মানতে নারাজ যে, কোনওরকম চাপের মুখে এই ধরপাকড় হয়েছে। বলেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে সব নিষিদ্ধ সংগঠনের বিরুদ্ধেই। দু সপ্তাহ এই ধরপাকড় চলবে। গ্রেফতার হওয়া লোকজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করা হবে।
পাকিস্তান গতকালই নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যক্তি, সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার পদ্ধতি সহজ, সরল করার জন্য একটি আইন চালু করেছে। তার রেশ বজায় রেখেই এবার গ্রেফতারি শুরু হল। অভ্যন্তরীণ প্রতিমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানের মাটিকে কারও বিরুদ্ধেই সন্ত্রাস চালানোর জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না, এটাই তাঁর সরকারের পলিসি।
গতকালের আইন ব্যাখ্যা করে পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সল বলেন, এর অর্থ, সরকার দেশে সব নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর সম্পত্তি, ঘরবাড়ির দখল নিজের হাতে নিয়েছে।