ইসলামাবাদ: পূর্বসূরিদের থেকে আলাদা হতে পারেননি তিনি। মেয়াদ শেষের আগেই ছাড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পদ। এ বার আরও বিপাকে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)। আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাঁকে নিষিদ্ধ করল পাক নির্বাচন কমিশন (Pakistan Election Commission)। অর্থাৎ এই পাঁচ বছর তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, প্রশাসনিক কোনও দফতরের দায়িত্ব নিতে পারবেন না। এর পাশাপাশি পাক সংসদের সদস্যপদও হারালেন ইমরান।


পাক-নির্বাচনে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ ইমরান খান


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশ-বিদেশ থেকে, এমনকি বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে ইমরান কোটি কোটি টাকার উপহার গ্রহণ করেছিলেন এবং সেই সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই দামি উপহার বিক্রি করে মোটা টাকা আয়ও করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা জেরেই এমন পদক্ষেপ পাক নির্বাচন কমিশনের। শুধু তাই নয়, ইমরানের বিরুদ্ধে অপরাধ আইনে মামলাও শুরু হতে চলেছে।


পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, পদে থাকাকালীন সব সরকারি আধিকারিককে উপহার হিসেবে পাওয়া সব সামগ্রীর উল্লেখ করতে হয়। সেগুলি বিক্রি করলে, মূল্যের কিছুটা অংশ নিজেরাও রেখে দিতে পারেন। শুধু তাই নয়, পদে থাকাকালীন চাইলে আসল মূল্যের ৫০ শতাংশ দাম দিয়ে সেই উপহার কিনে নিজেদের কাছে রেখে দিতে পারেন তাঁরা। উপহারের দাম পাক মুদ্রায় ৩০ হাজার টাকার নিচে হলে, তার জন্য কোনও টাকা দিতে হয় না।


আরও পড়ুন: Pakistan : FATF এর ধূসর তালিকার বাইরে পাকিস্তান ! জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ জোগানো বন্ধ হবে কি?


কিন্তু ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর যে বহুমূল্য উপহার পান, তা ইমরান খোলসা করেননি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ২০১৮-র জুলাই থেকে ২০১৯-এর জুন পর্যন্তই ৩১টি বহুমূল্য উপহার পান ইমরান। এর মধ্যে মাত্র চারটিরই দাম মেটান তিনি। এর মধ্যে রয়েছে বহুমূল্য চারটি হাতঘড়িও। সেগুলি প্রথমে বিক্রি করে, পরে সরকারি কোষাগারে ইমরান ২০ শতাংশ টাকা জমা করেন বলে অভিযোগ।


পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি নেকলেস উপহার পেয়েছিলেন ইমরান, যার মূল্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত সমস্ত উপহার রাষ্ট্রের ভাঁড়ারে জমা দিতে হয়। কিন্তু ইমরান তা করেননি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তোষা-খানা অর্থাৎ সরকারি উপহারের ভাঁড়ারে ওই নেকলেসটি জমা দেওয়ার বদলে, সেটি নিজের প্রাক্তন বিশেষ সহকারী জুলফিকর বুখারিকে দিয়ে দেন তিনি। জুলফিকর সেটি লহৌরে ১৮ কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন। সেই টাকা ইমরানের পকেটে ঢোকে।


নওয়াজ শরিফের মতোই নিষিদ্ধ হলেন ইমরান খান


এ বছর ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন ইমরান। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে সমর্থকদের একজোট করতে উদ্যত হয়েছিলেন ইমরান। সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে। পঞ্জাব প্রদেশের উপনির্বাচনে জয়ের পর জুলাই মাসে নতুন করে নির্বাচনের দাবিও তোলেন ইমরান। এর আগে, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও নিষিদ্ধ কের পাক নির্বাচন কমিশন।