ইসলামাবাদ: মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল) নামে সংগঠন খুলে ২০১৮-র সাধারণ নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা করেছে আগেই। কিন্তু মুম্বই সন্ত্রাসের মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সঈদের মদতপুষ্ট নতুন সংগঠনটির রাজনৈতিক স্বীকৃতি চেয়ে পেশ করা আবেদন খতিয়ে না দেখে খারিজ করে দিতে আদালতে আবেদন জানাল পাকিস্তান সরকার। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন গত ১১ অক্টোবর এক নির্দেশে এমএমএলের রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। সেই পদক্ষেপকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে এমএমএল। তাদের পিটিশনের ব্যাপারে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পেশ করা লিখিত উত্তরে জানিয়েছে, তারা এমএমএল-কে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি দেওয়ার বিরুদ্ধে কারণ ওরা নিষিদ্ধ সংগঠন থেকে তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা এজেন্সির রিপোর্টের ভিত্তিতেই অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। ওই রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এমএমএল রাজনৈতিক দল হিসাবে স্বীকৃতি পেলে 'রাজনীতিতে হিংসা, উগ্রপন্থা মাথাচাড়া দেবে'। আদালতে পাক অভ্যন্তরীণ মন্তকের পেশ করা উত্তরে বলা হয়েছে, এমএমএল হল নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তৈবা ও জামাত-উদ-দাওয়ার সৃষ্টি।
পাকিস্তানের ২০০২-এর রাজনৈতিক দল সংক্রান্ত নির্দেশানুসারে, যেসব সংগঠন মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ঢঙে কাজকারবার করে, পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির ক্ষতি করে, সংকীর্ণ ভাবনাচিন্তা, আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক ঘৃণা ছড়ায়, জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম বহন করে, তাদের সদস্যদের সামরিক বা আধাসামরিক ট্রেনিং দেয়, তারা রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়।
পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, একটি নিরাপত্তা এজেন্সির অভিমত, এমএমএল তাদের জন্মদাত্রী সংগঠনের (লস্কর ও জামাত) থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে নিজেদের মতো চলবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। ওই এজেন্সির সুপারিশ, এ ধরনের গোষ্ঠী স্বীকৃতির রেজিস্ট্রেশন পেলে রাজনীতিতে হিংসা, সন্ত্রাস ছড়াবে, তাই এমন পদক্ষেপ এড়ানোই বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া, জামাত, লস্কর ও ফালাহ-ই-ইনসানিয়াত রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে। তাই ওদেরই তৈরি এমএমএলের রেজিস্ট্রেশন পাওয়া সমর্থনযোগ্য নয়।
প্রসঙ্গত, জামাত প্রধান সঈদ জানুয়ারি থেকে গৃহবন্দি ছিল। পাকিস্তান সরকার তাকে অন্য আর কোনও মামলায় আটক না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গত ২৪ নভেম্বর ছাড়া পায় সে।
নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ায় সেপ্টেম্বরে তাঁর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির এনএ-১২০ আসনে হওয়া উপনির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছিল এমএমএল। ৬০০০ ভোট পায় তাদের প্রার্থী শেখ ইয়াকুব।