নয়াদিল্লি:  মাত্র দিন কয়েক আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাকিস্তান ঘোষণা করে তাঁরা ভারতের কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিনের প্রতিরোধে শর্ট রেঞ্জ পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মস্তিষ্কপ্রসূত একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে নয়াদিল্লি পাকিস্তান থেকে আসা যেকোনও ধরনের পরমাণু হানার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। সূত্রের খবর, পাকিস্তান এবার ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় একাধিক ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গপথ তৈরি করছে পরমাণু অস্ত্র মজুত করার জন্যে। এলাকাটি অমৃতসর এবং দিল্লি থেকে খুবই কাছে। ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী মিয়ানওয়ালি জেলায় এই সুরঙ্গ পথগুলো তৈরি করছে ইসলামাবাদ।

পাক বিজ্ঞানী এ.কে খান এক সময় দাবি করেছিলেন পাঁচ মিনিটে ভারতের ওপর পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম পাক সেনা। আর সত্যিই যদি অমৃতসর এবং দিল্লি থেকে খুব কাছে সুরঙ্গ তৈরি করে অস্ত্র মজুত করে পাক সেনা, তাহলে তা নিঃসন্দেহে ভারতের জন্যে চিন্তার কারণ। সূত্রের খবর, অমৃতসর থেকে সুরঙ্গগুলো মাত্র ৩৫০ কিমি দূরত্বে রয়েছে এবং দিল্লি থেকে ৭৫০ কিমি দূরে।

এই সুরঙ্গগুলোর কয়েকটি বিশেষত্ব হল

ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গগুলো দৈর্ঘ্যে এবং প্রস্থে ১০ মিটার। সুরঙ্গগুলোতে পৃথক ঢোকার এবং বেরনোর দরজা রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজের দাবি, জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগ রয়েছে ওই সুরঙ্গগুলোর। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর সহজে নিয়ে যাওয়ার জন্যে সড়কপথের সঙ্গে যোগাযোগ মসৃন রাখা হয়েছে। ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর মূলত পরমাণু মিসাইল ছাড়তে ব্যবহৃত হয়। জানা গিয়েছে যে এলাকা দিয়ে সুরঙ্গগুলো গিয়েছে, সেখানে নিঃশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পাক সেনা। চারিদিকে উঁচু বেড়া দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গগুলোতে ১২ থেকে ২৪টি করে পরমাণু অস্ত্র মজুত করা সম্ভব।

মডারেটর ডেভিড সাঙ্গার এক সময় ইউএনডিএ-তে দাবি করেছিলেন পাকিস্তান বিশ্বের সমস্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি করছে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানের কাছে প্রায় ১৪০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। এরপরই সেপ্টেম্বরে ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট-এর তরফে দাবি করা হয়, পাকিস্তান সেদেশের মোট নটি পৃথক জায়গায় তাঁদের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার লুকিয়ে রেখেছে। তবে এই নিয়ে প্রথমবারের জন্যে ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গপথ তৈরি করল না পাকিস্তান।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তাবাহিনীর তরফে দাবি করা হয় জম্মু কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে ১৪ ফুট লম্বা একটি সুরঙ্গপথ তৈরি করেছে পাকিস্তান। বিএসএফ-এর দাবি তারা সেখান থেকে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এই সুরঙ্গপথটি নিরাপত্তাবাহিনী সেদিন আবিষ্কার করে, যার ২৪ ঘণ্টা আগে বিএসএফ-এর ফিল্ড কম্যান্ডার এবং পাকিস্তান রেঞ্জার্সরা নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক করেন। সেখানে দুপক্ষই একটি শান্তি চুক্তিতে আবদ্ধ হন যে আন্তর্জাতিক সীমান্তে শান্তি পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে যেকোনও উপায়। তাই সবরকমের সংঘাত এড়িয়ে তারা শান্তি আনার জন্যে যেকোনও রকমের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, আলোচনা হয় বৈঠকে।