নয়াদিল্লি: ইসলামি জঙ্গিদের মোকাবিলায় আফগানিস্তানকে সাহায্য করতে আরও বেশি অস্ত্র দিচ্ছে ভারত। পূর্ব ও পশ্চিমের দুই প্রতিবেশী দেশ-ভারত ও আফগানিস্তানের এই ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতায় উদ্বিগ্ন পাকিস্তান।


গত ১৫ বছরে ভারত আফগানিস্তানকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান ক্ষুন্ন হতে পারে ভেবেই অস্ত্রসামগ্রী সেভাবে সরবরাহ করা থেকে বিরত থেকেছে ভারত।

গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লি আফগানিস্তানকে ৪ টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। কাবুলে তালিবান শাসনের অবসানের পর সেই প্রথম আফগানিস্তানকে এ ধরনের সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের ঘোষণা করে।

ভারতে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত শাইদা মহম্মদ আবদালি বলেছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। তালিবান, ইসলামিক স্টেট এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মোকাবিলার জন্য আফগানিস্তানের অস্ত্রের খুবই প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেছেন, চারটি হেলিকপ্টারের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের আরও অনেক বেশি প্রয়োজন। বর্তমানে আমরা এমন একটা পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে চলেছি, যা ভারত সহ এই অঞ্চলের প্রত্যেকের কাছেই উদ্বেগজনক।
আগামী ২৯ আগস্ট ভারতে আসছেন আফগানিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কাদাম শাহ শাহিম। মার্কিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আলোচনাক্রমে যে সামরিক সরঞ্জামের তালিকা তৈরি হয়েছে তা আফগান সেনাপ্রধান ভারতের কাছে পেশ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এইসব সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের ক্ষেত্রে ভারত কত অর্থ পাবে বা কতটা বিনামূল্যে দেওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আফগানিস্তানকে এমআই-২৫, সেনা ও চিকিত্সা সংক্রান্ত প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ছোট হেলিকপ্টার এবং সেদেশের বায়ুসেনাতে থাকা রুশ-নির্মিত বিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে পারে ভারত।

কিন্তু ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের এই ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা পাকিস্তানের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

সম্প্রতি পাক-আফগানিস্তান সম্পর্কে শীতলতা তৈরি হয়েছে। আফগানিস্তানের বক্তব্য, পাকিস্তানকে তাদের ভূখণ্ডে জঙ্গি তত্পরতা বন্ধে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে। অন্যদিকে, কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অশান্তির জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি অশান্ত বালুচিস্তানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। এতে চাপে পড়ে গিয়েছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে এই দুই প্রতিবেশী দেশীর সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলবে ইসলামাবাদকে।

ভারত ও আফগানিস্তান ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। যদিও তিনি পাকিস্তানে অস্থিরতা তৈরির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের আশা, পাকিস্তানে অস্থিরতা তৈরির জন্য আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করবে না ভারত।