ইসলামাবাদ: পয়গম্বর হজরত মহম্মদের ব্য়ঙ্গচিত্র দেখিয়ে  ক্লাসে অবাধ বাকস্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করায় প্রকাশ্যে গলা কেটে শিক্ষক হত্যার ঘটনায় ধিক্কার উঠেছে দুনিয়াজুড়ে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েলম মাকরঁ প্যারিসের শহরতলির স্কুলের বাইরের ওই ভয়াবহ হত্যার নিন্দা করে কট্টর ইসলামপন্থীদের সমালোচনা, মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ সমর্থন করায় পাল্টা তাঁকে আক্রমণ করলেন ইমরান খান। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইসলামকে আক্রমণের অভিযোগ তুলেছেন মাকরেঁর বিরুদ্ধে।
মাকরঁ বলেছিলেন, ইসলামপন্থীরা আমাদের ভবিষ্যত্ কেড়ে নিতে চায়, তাই ওই শিক্ষককে খুন করা হয়েছে। ইসলাম বিশ্বব্যাপী সঙ্কটে পড়েছে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেও  বিতর্কের ঝড় তুলেছেন মাকরঁ।


পাল্টা একগুচ্ছ ট্যুইট করে ইমরান বলেছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্য বিভাজন ঘটাবে। এমন সময়ে প্রেসিডেন্ট মাকরঁ আরও মেরুকরণ ও প্রান্তিকীকরণ না ঘটিয়ে বরং ক্ষোভ প্রশমনের পাশাপাশি চরমপন্থীদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতেন। মেরুকরণের জেরে মৌলবাদের রমরমা হওয়া অনিবার্য। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, তিনি মুসলিম, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী বা নাতসি মতাদর্শে বিশ্বাসী, যে-ই হোক না কেন, হিংসা ছড়ানো সন্ত্রাসবাদীদের পরিবর্তে বরং ইসলামকেই আক্রমণ করে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামে আতঙ্কেই মদত দেওয়ার রাস্তা নিলেন।

২০১৫র জানুয়ারি ফরাসি কার্টুন ম্য়াগাজিন শার্লি এবদোয় মহম্মদের যে বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র  প্রকাশের জেরে তাদের দপ্তরে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল, সম্প্রতি খুন হওয়া ফরাসি শিক্ষক ক্লাসে পড়ানোর সময় সেই ছবিই ব্যবহার করায় অনলাইনে ঘৃণা, বিদ্বেষের টার্গেট হন। ইসলামে মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র নিষিদ্ধ।

অতি-রক্ষণশীল পাকিস্তানে ধর্মদ্রোহিতা অত্যন্ত সিরিয়াস একটি ইস্যু, এতটাই যে, কেউ ইসলাম বা মহম্মদের অবমাননা করেছেন প্রমাণ হলে মৃত্যুদণ্ডও হয়। এই  প্রেক্ষাপটেই ইমরানের অভিযোগ, ইসলাম সম্পর্কে কিছু না জেনে-বুঝেই তাকে আক্রমণ করে প্রেসিডেন্ট মাকরঁ ইউরোপ ও বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলিমের ভাবাবেগে  আঘাত করেছেন। গত মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভাষণেও ইমরান মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্রগুলি ফের ছাপায় শার্লি এবদোর তীব্র নিন্দা করেন। পাকিস্তানের ধর্মীয় কট্টরপন্থীদের তোয়াজ করে চলেন বলে নানা মহলে অভিযুক্ত ইমরান বলেন, ‘জেনেশুনে এমন উসকানি দেওয়া’ ‘বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ হওয়া উচিত’।