শনিবার এক বিবৃতিতে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরের জন্য লড়াই করার লক্ষ্যে এই ২২ জনকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। এই বিশেষ দলের সঙ্গে কাশ্মীরের মানুষের শক্তি, প্রার্থনা, আইনসভার অনুমোদন এবং সরকারের সমর্থন আছে।’
দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মহলে কাশ্মীর নিয়ে সরব হতে চাইছে পাকিস্তান। উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও ক্রমাগত ভারতের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে চলেছে পাকিস্তান। তারই ফলশ্রুতিতে এবার শরিফের নয়া উদ্যোগ।
এর আগে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে কাশ্মীরে অশান্তির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন মেহবুবা মুফতি। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে কাশ্মীরে অশান্তিতে উস্কানি এবং মদত দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ জানানোয় এবং তারপর লাহৌরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করায় আমি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে পঠানকোটে জঙ্গি হামলা হল। দুঃখজনকভাবে পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর সুযোগ হারিয়েছে। এখন তারা আমাদের সাহায্য করার বদলে কাশ্মীরের পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরা পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন। এবার পাকিস্তানকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী। আজ সাত নম্বর রেসকোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁদের মধ্যে এক ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। মেহবুবা বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, কাশ্মীরের সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার সেই উদ্যোগ ফের নেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে মেহবুবা বলেছেন, ‘আমাদের সবার মতোই প্রধানমন্ত্রীও জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনিও চান রাজ্যের এই পরিস্থিতির বদল হোক এবং রক্তপাত বন্ধ হোক।’
কাশ্মীরের পরিস্থিতির উন্নতির জন্য হুরিয়ত কনফারেন্স সহ সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে মত প্রকাশ করলেও, টানা ৫০ দিন ধরে চলা কার্ফু তুলে নেওয়ার পক্ষে নন মেহবুবা। তাঁর দাবি, স্থানীয় মানুষ ও শিশুদের জীবন রক্ষা করার জন্যই কার্ফু জারি করে রাখা হয়েছে।
মেহবুবার এই বার্তার পরেই পাক প্রধানমন্ত্রীর নয়া চাল বুঝিয়ে দিল, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় রাজি নয় পাকিস্তান। বরং ভারতের বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক মহলে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে সরব হওয়ার পক্ষে তারা। এই পরিস্থিতিতে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সে দিকেই তাকিয়ে পর্যবেক্ষকরা।