বেজিং: অজিত ডোভালের সঙ্গে চিনা স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জেইচির গত ২৮ জুলাইয়ের বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য এই প্রথম বুধবার প্রকাশ করল চিন। জানাল, দু দেশের মধ্যে চলতি বিরোধ, সংঘাত মেটাতে কোনও শর্ত দেওয়া চলবে না, চিনের এলাকাগত সার্বভৌমত্ব, আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মৌলিক নিয়মগুলিকে সম্মান দেখিয়ে সিকিমের ডোকালাম থেকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করে ভারতকে স্পষ্ট ব্যবস্থা নিতে হবে, এটাই চিনের দৃঢ় অবস্থান এবং ভারতকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিনা বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ডোভাল, জেইচি ব্রিকস সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও প্রাসঙ্গিক বড় সমস্যাগুলি নিয়েও কথা বলেছেন।

ডোকালাম ইস্যুতে অচলাবস্থার ব্যাপারে আলোচনা সম্পর্কে প্রশ্নের লিখিত উত্তরে চিনা বিদেশমন্ত্রক বলেছে, জেইচি ডোভালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন 'তাঁর অনুরোধে, প্রচলিত রীতি অনুসারে'। তবে তাঁদের আলোচনায় যে কোনও সূত্র বেরয়নি, সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছে, ভারত-চিন সীমান্তের সিকিম শাখায় চিনা ভূখণ্ডে ভারতীয় বাহিনীর অনুপ্রবেশের ব্যাপারে চিনের কঠোর অবস্থান ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা জানিয়ে দিয়েছেন জেইচি।

এ ব্যাপারে ভারতের অবস্থান গত মাসেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের সওয়াল করে তিনি বলেছেন, কোনও আলোচনার আগে দুপক্ষকেই সেনা সরাতে হবে।

প্রসঙ্গত, ডোকালামে চিনা সেনার রাস্তা তৈরির চেষ্টা থেকেই চলতি সংঘাতের শুরু। ভারত চিন সরকারকে এও জানিয়ে দিয়েছে যে, রাস্তা নির্মাণ স্থিতাবস্থায় বড় ধরনের বদল ঘটাবে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও এর বড় প্রভাব পড়বে।

১৬ জুন থেকে শুরু হওয়া চলতি বিবাদের বিষয়ে মানচিত্র ও অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য সমেত ১৫ পৃষ্ঠার একটি তথ্যপঞ্জিও ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে চিনা বিদেশমন্ত্রক।

তাতে বলা হয়েছে, ১৮ জুন প্রায় ২৭০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান চিনা এলাকায় রাস্তা নির্মাণে বাধা দিতে চিনের ভূখণ্ডের ১০০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়ে। ফলে উত্তেজনা ছড়ায়। ৪০০-র বেশি লোক এক জায়গায় তিনটি তাঁবু ফেলে চিনা ভূখণ্ডের ১৮০ মিটারের বেশি ভিতরে এগিয়ে আসে। জুলাইয়ের শেষেও ৪০ জনের বেশি ভারতীয় জওয়ান, একটি বুলডোজার অন্যায় ভাবে চিনের ভূখণ্ডে রয়ে গিয়েছে।

চিনা তথ্যপঞ্জির পাল্টা নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ভারত মনে করে, চিনের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মসৃণ অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রাক-শর্ত হল, ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি, সুস্থিতি চাই।

নয়াদিল্লি আগেই উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, রাস্তা নির্মাণ হলে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে ভারতের সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে চিন।